

ব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচাতে অনেকেই এখন ফ্রোজেন খাবারের ওপর ভরসা করছেন। রান্নার ঝামেলা কম, সংরক্ষণও সহজ—এই সুবিধার কারণে ফ্রিজভরা থাকে নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ফ্রোজেন খাবার একরকম নিরাপদ নয়। নিয়মিত কিছু ফ্রোজেন খাবার খেলে ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি হতে পারে, বাড়তে পারে নানা রোগের ঝুঁকি।
কর্মব্যস্ততার কারণে প্রতিদিন ঘরে রান্না করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তাই ঘরে বানানো খাবার কিংবা বাইরে থেকে কেনা প্রক্রিয়াজাত খাবার ফ্রিজে রেখে পরে খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত ফ্রোজেন খাবারে লবণ, চিনি ও অস্বাস্থ্যকর চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। এগুলো নিয়মিত খেলে হৃদরোগসহ দীর্ঘমেয়াদি নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন ফ্রোজেন খাবার বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।
ফ্রোজেন মাংস
ফ্রোজেন মাংস, বেকন ও সসেজের মতো খাবারে সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও প্রিজারভেটিভের পরিমাণ বেশি থাকে। এসব উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় থাকলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
ফ্রোজেন আলুর ফ্রাই ও নাগেটস
ফ্রোজেন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিকেন নাগেটসসহ বিভিন্ন স্ন্যাকস আগে থেকেই ভাজা থাকে। এতে অস্বাস্থ্যকর চর্বি ও লবণের মাত্রা বেশি, কিন্তু পুষ্টিগুণ খুব কম। এসব খাবার বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে এবং হৃদরোগের আশঙ্কা তৈরি হয়।
ফ্রোজেন পিৎজা ও ফাস্ট ফুড
ফ্রোজেন পিৎজায় সাধারণত পরিশোধিত ময়দার বেস, প্রক্রিয়াজাত পনির ও চর্বিযুক্ত টপিং ব্যবহার করা হয়। এসব খাবারে ক্যালোরি, লবণ ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে। নিয়মিত খেলে ওজন বৃদ্ধি ও বিপাকীয় সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত ফ্রোজেন খাবার
অনেক ফ্রোজেন খাবারে স্বাদ ও স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত সোডিয়াম, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়। ঘন ঘন এসব খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের অবনতি এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফ্রোজেন মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার
আইসক্রিম ও অন্যান্য ফ্রোজেন মিষ্টিতে পরিশোধিত চিনি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি। নিয়মিত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, বাড়ে ক্যালোরি গ্রহণ। এতে ডায়াবেটিস ও বিপাকীয় সমস্যার ঝুঁকিও থাকে।
পরিমিত পরিমাণে ফ্রোজেন খাবার খাওয়া সমস্যা নয়। তবে যদি এগুলো নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যকর ঘরে রান্না খাবারের বিকল্প হয়ে যায়, তাহলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন এমন অভ্যাস থাকলে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং হজমজনিত সমস্যার আশঙ্কা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রোজেন খাবার খাওয়ার সময় লেবেল ভালোভাবে পড়া, কম লবণ ও কম চর্বিযুক্ত বিকল্প বেছে নেওয়া এবং সম্ভব হলে ঘরে রান্না খাবারকে অগ্রাধিকার দেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
মন্তব্য করুন