ঘর সাজাতে আমাদের কত রকমের ভাবনা! কেউ দেয়ালের রঙ পাল্টায়, কেউ নতুন ল্যাম্প ঝুলিয়ে দেয়, কেউ আবার সোফা কাভার বদলে একটু ‘নিউ লুক’ আনতে চায়। কিন্তু জানেন কী? অনেক সময় এত কিছু না করেও, শুধু একটা জিনিস বদলালেই ঘরের পুরো চেহারা বদলে যায়—পর্দা!
শুধু জানালা ঢাকার জন্য না, এখন পর্দা মানেই ঘরের স্টাইল, মুড আর আপনার রুচির একটা চুপচাপ ভাষা। একটা ঠিকঠাক পর্দা বদলে দিতে পারে ঘরের আলো, ফিলিং আর আপনার নিজের ভাইব।
চলুন, ঘরের কোন কোন জায়গায় কেমন পর্দা মানায়, সেটা জেনে নিই। আর হ্যাঁ, কিছু ছোট টিপস থাকছেই, যাতে আপনার ঘরটা দেখতেই না, থাকতে আরামদায়কও হয়!
অনেকেই ভাবেন, পর্দা মানেই শুধু রোদের আলো আটকানো আর একটু প্রাইভেসি রাখা। কিন্তু আসলেই কি শুধু এইটুকুই? না! একটা সঠিক পর্দা—
- ঘরের আলোকে করে নরম আর সুন্দর
- রঙের ভারসাম্য বজায় রাখে
- আর সেট করে দেয় ঘরের মুড
এক কথায়—পর্দা ঠিক থাকলে, ঘরের হাফ ডেকোরেশন এমনিই হয়ে যায়!
১. প্রথম ধাপ : ফ্যাব্রিক নির্বাচন
- পর্দার কাপড় ঠিক না হলে, ঘরের স্টাইল মাটি!
- হালকা হাওয়ায় উড়ন্ত পর্দা ভালো লাগে? → সুতি, লিলেন বা ভয়েল ফ্যাব্রিক নিন
- গ্ল্যামারাস লুক চান? → ভেলভেট, সিল্ক বা ব্লেন্ডেড হেভি কাপড়
- অনেক রোদ আসে জানালা দিয়ে? → হালকা রঙের কটন পর্দা বেস্ট
- বড় জানালা? → ফ্লোরটাচ, লম্বা কুচিওয়ালা পর্দা দিন—একদম ক্লাসিক!
২. ঘরের রঙ আর সাইজ অনুযায়ী পর্দা
পর্দার রঙ ঠিকমতো বাছা মানে চোখেও ভালো লাগে, ঘরেও শান্তি লাগে।
- ডার্ক দেয়াল → হালকা রঙের পর্দা
- হালকা দেয়াল → একটু ডিপ কালার বা গ্র্যাডিয়েন্ট টোন
- ছোট ঘর → পাতলা ফ্যাব্রিক, হালকা রঙ
- বড় ঘর → ডাবল লেয়ার, বড় প্রিন্টেও কোনো সমস্যা নেই
ট্রেন্ডি টিপ : এখন মেঝে ছোঁয়া লং টাচ পর্দা খুব ইন। তবে পর্দা পুরো ফ্লোরে ছুঁলেই স্টাইল হয়, এমন না—একটু ওপরে রাখলে ঝামেলাও কম হয়, লুকও ভালো থাকে।
আরও পড়ুন : সারাদিন সতেজ থাকতে সকালে করুন এই সহজ ব্যায়াম
আরও পড়ুন : রোববার চন্দ্রগ্রহণ, কীভাবে উপভোগ করবেন?
বেডরুম মানেই শান্তি। তাই—
- বেবি ব্লু, প্যাস্টেল গ্রিন, অফ হোয়াইট—এসব রঙে স্নিগ্ধ একটা ফিল আসে
- যদি ওয়ালে অনেক কিছু থাকে → সলিড কালার পর্দা নিন
- বাচ্চাদের রুম → কার্টুন প্রিন্ট, উজ্জ্বল রঙ খুব ফান লাগে
- দেশি টাচ চান? → খাদি বা ব্লক প্রিন্ট একদম পারফেক্ট
টিপস: ট্রান্সপারেন্ট বা নেট পর্দা বেডরুমে এড়িয়ে চলুন, প্রাইভেসির জন্য না মানায়
এই জায়গাগুলোতে একটু স্টাইল চলে!
- ডাবল লেয়ার, এমব্রয়ডার্ড বা লেইস দেয়া পর্দা নিলে গর্জিয়াস লুক আসে
- সোফা বা কুশনের রঙের সাথে ম্যাচ করে নিলে ঘরটা দেখতেও বেশি হোমি লাগে
- ড্রয়িং-ডাইনিং একসাথে হলে → মাঝখানে পাতলা নেট পর্দা টানিয়ে দিন—একদম ইনস্টাগ্রামেবল!
অনেকেই এখন নিজের মতো করে পর্দা ডিজাইন করছেন। কারণ এতে খরচও কম, আবার একদম নিজের পছন্দমতো হয়!
- দুই পাশে প্রিন্ট, মাঝে সলিড রঙ
- অম্ব্রে শেড
- বোহো স্টাইল / ম্যাক্রামে
- ব্লক প্রিন্টে দেশি গন্ধ
টিপস : কাপড় কিনে নিজের পছন্দ মতো ডিজাইনারকে বললে, ইউনিক কিছু পাবেন—শুধু আপনার ঘরের জন্য!
- গরমকালে → হালকা রঙের, ভয়েল বা কটন ফ্যাব্রিক
- শীতে → গাঢ় রঙের, ভারি ফ্যাব্রিকের পর্দা নিন
- উৎসব/গেস্ট আসছে? → একটু ঝলমলে ডিজাইন বা ভিন্ন টেক্সচার আনুন—ঘরেই যেন উৎসব নেমে আসে!
- সাধারণত ৬ মাসে একবার ধোয়া ভালো
- ডাস্ট অ্যালার্জি থাকলে → ১-২ মাস পরপর ওয়াশ
- সুতি/সিনথেটিক → ওয়াশিং মেশিনেই দিব্যি চলে
- রিং থাকলে আগে খুলে ফেলুন
- ভেলভেট বা হেভি ফ্যাব্রিক → লন্ড্রি বা প্রফেশনাল ক্লিনিং বেস্ট
- ঠান্ডা পানি আর মাইল্ড সেটিং ব্যবহার করুন
আরও পড়ুন : গরম খাবারে লেবু দিয়ে খাচ্ছেন? জেনে নিন ফলাফল
আরও পড়ুন : সবসময় ক্লান্ত লাগে? সহজ সমাধান বিট কেভাস
ঘর মানেই শুধু চারটে দেয়াল না—এটা আমাদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা, নিরাপত্তার আশ্রয়। আর সেটাকে সুন্দর করে তোলার জন্য সবসময় দামি জিনিস লাগেই না।
একটা সুন্দর, রুচিশীল পর্দা দিয়েই ঘর হয়ে উঠতে পারে আরও প্রাণবন্ত, আরামদায়ক আর একদম আপনার মতো। তাই ভাবা বাদ দিন, কাজ শুরু করুন— নতুন পর্দা আনুন, আর ঘরের লুকটা বদলে দিন একেবারে!
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন