শৈশব থেকেই মানুষ হাঁটা শুরু করে, থামে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে। কেউ হাঁটে রুটিরুজির জন্য, কেউ পড়াশোনার জন্য, আবার কেউ মনের উল্লাসেও হাঁটে। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, মানুষের এই হাঁটাচলা বেশ উপকারী।
চিকিৎসকদের দাবি, খালি পায়ে হাঁটলে মানসিক চাপ কমে। মন ভালো থাকে। শারীরিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে বিশেষ কার্যকর ভূমিকা রাখে। ক্যালোরি ও মেদ কমাতে তাই হাঁটার কোনো বিকল্প নেই।
তবে শুনে অবাক হবেন যে, খালি পায়ে হাঁটা নবীজিরও (সা.) সুন্নত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের আগেই প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর আগে খালি পায়ে হাঁটার জন্য আদেশ করেছেন তিনি (সা.)। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ সুনানে নাসায়ির এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘রাসুল (সা.) মাঝেমধ্যে খালি পায়ে হাঁটার নির্দেশ করেছেন’।
আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর এক সাহাবি মিসরে অবস্থানরত ফাদালাহ ইবনে উবাইদ (রা.)-এর কাছে পৌঁছেন। অতঃপর তিনি বলেন, ‘আমি শুধু আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসিনি, বরং আমি ও আপনি যে হাদিসটি রাসুল (সা.)-এর কাছে শুনেছি, আশা করি এ সম্পর্কে আপনার কিছু জানা আছে।’
ইবনে উবাইদ (রা.) বলেন, ‘তা কোন বিষয়ে?’ তিনি বলেন, ‘এরূপ আপনি একটি স্থানের নেতা, অথচ আপনার মাথায় চুল এলোমেলো দেখছি?’ ফাদালাহ বলেন, ‘রাসুল (সা.) আমাদের মাত্রাতিরিক্ত জাঁকজমক দেখাতে নিষেধ করেছেন। এরপর তিনি (ফাদালাহ) জিজ্ঞেস করেন , ‘আপনার পায়ে জুতা দেখছি না কেন?’ সাহাবি বলেন, ‘নবীজি (সা.) আমাদের মাঝে মাঝে খালি পায়ে চলার আদেশ দিতেন (আবু দাউদ : ৪১৬০)।’
উল্লিখিত হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা পালনের উদ্দেশ্যে মাঝে মাঝে খালি পায়ে হাঁটা সুন্নত। এতে মানুষের আত্ম-অহমিকা কিছুটা সংবরণ হয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সুরা লুকমানে রব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন,‘পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ কর না। নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।’
তবে এক পায়ে জুতা পরিধান করে অন্য পা খালি রেখে হাঁটতে নিষেধ করা হয়েছে হাদিসে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন এক পায়ে জুতা পরে না হাঁটে। হয়তো উভয় পায়ে জুতা পরে হাঁটবে নয়তো উভয় পায়ের জুতা খুলে হাঁটবে’ (বুখারি ও মুসলিম)।
মন্তব্য করুন