দেশের চলমান উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো সহিংসতা না করে শান্তিপূর্ণ পন্থায় রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক’ (বিপিএসএন)।
রোববার (৩০ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিপিএসএনের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গণতন্ত্র সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত। তবে এর চর্চা কিছুতেই সহজসাধ্য নয়। এর জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন, পরমতসহিষ্ণুতা, জনগণের ইচ্ছার স্বাধীনভাবে প্রকাশের সুযোগ ও জন-ইচ্ছাকে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান দেওয়া। বাংলাদেশের মতো পরস্পরবিরোধী ধারায় বিভক্ত সাংঘর্ষিক, প্রতিহিংসা-প্রতিরোধপরায়ণ রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের চর্চা খুবই দুরূহ এবং রাজনৈতিক নেতাদের সম্মুখে তা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ।’
‘তাই বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোনো অবকাশ নেই। শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নয়ন-অগ্রগতি, অন্য কথায়, দেশ-জাতি-জনগণের স্বার্থে কোনো প্রকার সহিংসতা কাম্য হতে পারে না। যে বা যারা এরূপ পন্থা অবলম্বন করেন, তা কখনো তাদেরও স্বার্থের অনুকূলে যায় না। আমাদের কাছে অতীতের অভিজ্ঞতাও সে কথা বলে। পরমুখী হয়ে দেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কাঙ্ক্ষিত ও সম্মানজনক যেমন নয়, তেমনি তা সম্ভবও নয়। দেশের নেতাদেরই এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন, ‘বাস্তব পরিস্থিতির তাগিদ মেনে নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি বা মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদ বিনষ্ট করে এমন পন্থা পরিত্যাগ করে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের দেশ শাসনের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সাংবিধানিক ধারায়, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা নিরসনে অগ্রবর্তী হওয়ার জন্য আমরা সরকার ও বিরোধী দল নির্বিশেষে সব নেতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, গণতন্ত্রের চর্চা ক্ষণিকের কোনো বিষয় নয় বরং তা সার্বক্ষণিক। এর অব্যাহত চর্চার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান-কাঠামো গড়ে ওঠার সুযোগ পায়, যা ব্যতীত গণতন্ত্র কখনো নিরাপদ-নির্বিঘ্ন বা টেকসই হতে পারে না। আর গণতন্ত্র টেকসই হলে শুধু এক পক্ষই নয়, বস্তুত সব পক্ষই কোনো না কোনোভাবে বিজয়ী হয়।’
বিবৃতি দাতারা হলেন -
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মু. আনসার উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসেন, অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার খানম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অধ্যাপক ড. ভুঁইয়া মনোয়ার কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব হোসেন, অধ্যাপক ড. রফিক শাহরিয়ার, ড. মামুন আল মোস্তফা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হাসান জাকিরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমীন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসমা বিনতে ইকবাল, সহযোগী অধ্যাপক ড. নিবেদিতা রায়, নাজিয়া আরেফ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামান, রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডেমোক্র্যাসির পরিচালক ড. শরিফ আহমেদ চৌধুরী ও সেন্টার ফর পার্লামেন্ট স্টাডিজের পরিচালক ড. জালাল ফিরোজ।
মন্তব্য করুন