শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মাসজুড়েই বাড়বে দিন ও রাতের তাপমাত্রা

ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে রোববার (২ মার্চ) থেকে। মার্চ মাসজুড়েই থাকবে রমজান। আর এ মাস থেকেই গরম শুরু হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চলতি মার্চ মাসে তাপমাত্রা থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। মাসজুড়েই দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। এ মাসের ৯ তারিখের পর তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়তে পারে। মাসের শেষ দিকে এক থেকে দুটি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। কালবৈশাখীরও সম্ভাবনা আছে এ মাসে।

রোববার আবহাওয়া অধিদপ্তর মার্চ মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দিয়েছে। সেখানেই এ মাসের পূর্বাভাস এবং গত মাসের পরিস্থিতি তুলে ধরেছে।

চলতি বছর শীত ততটা পড়েনি। শীতের মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দেশে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল। সদ্য শেষ হওয়া ফেব্রুয়ারি মাসেও সেই ধারাবাহিকতা থেকেছে। গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। আর ফেব্রুয়ারি মাসে তাপমাত্রা ছিল ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টিও হয়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ কম।

মার্চ মাস গরম শুরুর মাস। এবার শীত কম পড়লেও হালকা শীতের আমেজ এখনো রয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে। মার্চ মাসে দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে এবং বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মার্চ মাসে দেশের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসের শেষ দিকে দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে এক থেকে দু’টি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ মাসে দুই থেকে তিন দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে আর এক দিন তীব্র কালবৈশাখীর সম্ভাবনা আছে। মার্চ মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, আগামী ৯ তারিখ পর্যন্ত তাপমাত্রা মোটামুটি কমই থাকতে পারে। এরপর বাড়তে থাকবে ধারাবাহিকভাবে। আসলে পুরো দেশেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপ থাকবে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত কয়েক দশকের তুলনায় এখন উত্তপ্ত বৈশ্বিক তাপমাত্রা, যার প্রভাব টের পাওয়া যায় গ্রীষ্মের শুরুতেই। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে দাবদাহে এবারও পুড়বে সারা দেশ। গত বছর খরতাপে বাংলাদেশে বিরাজ করেছিল টানা এক মাসের তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই, গরমের প্রথম মাসে শুরু হতে যাওয়া রমজানেও আবহাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মার্চ, এপ্রিল ও মে- এই তিন মাস ‘ক্রিমসন টাইম’। এ সময় কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এ সময়কে আমরা বর্ষাপূর্ব সময় বলি। এপ্রিল উষ্ণতম মাস হলেও মার্চ মাসের গরমটা এপ্রিলের কাছাকাছি বলা যায়। মার্চ থেকে গরমটা শুরু হয়ে এপ্রিলে গিয়ে চূড়ায় পৌঁছায়। মে মাস থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। আর জুন থেকে বর্ষাকাল শুরু হয়। মার্চ মাসে যেহেতু গরম থাকবে, সুতরাং রমজানটা আমাদের সেভাবেই পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, মার্চ মাসে কালবৈশাখী ঝড় হবে। আর কালবৈশাখী অল্প সময় ধরে হয়। এর ব্যাপ্তি ৩০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টা। এ সময় প্রচণ্ড বজ্রপাত হয়, এর সঙ্গে থাকে বিদ্যুৎ চমক। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় কালবৈশাখীও আসে। এ তিন মাসে সারা দেশে ২০০ থেকে ৩০০ মানুষ মারা যান।

সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কালবৈশাখী ঝড় শুরু হওয়ার আগে দেশের উত্তর-পশ্চিম কোনে পাহাড়ের মতো উঁচু করে মেঘ জড়ো হয়, সঙ্গে বিদ্যুৎ চমক থাকে। এরপর যদি সেখান থেকে বৃষ্টি হয়, তবে সেটি কালবৈশাখী ঝড়। এ ঝড়ের স্থায়ীত্ব খুব অল্প সময়। কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হয়ে থাকে। তবে সব কালবৈশাখী ঝড়ে শিলাবৃষ্টি হয় না। এ সময় কেউ যদি এক থেকে দেড় ঘণ্টা বাড়িতে বসে থাকেন, তবে তিনি ঝুঁকিমুক্ত থাকেন। তিনি বলেন, বজ্রপাত বা বিদ্যুৎ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কতা যদি কেউ অনুসরণ করেন, তবে তিনি বিপদমুক্ত থাকতে পারেন।

এদিকে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ার সতর্কতা দিয়েছে বেসরকারি আবহাওয়া সংস্থা বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)। সংস্থাটি জানায়, আগামী ৬ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত দেশের আবহাওয়া অনেকটা অত্যধিক চরমভাবাপন্ন থাকতে পারে। বর্তমানেও আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন আছে। চরমভাবাপন্ন বলতে দিন ও রাতের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান অনেক বেশি হওয়াকে বোঝায়। মানে দিনে গরম আর রাতে শীত।

বিডব্লিউওটি জানায়, আগামী ৬ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত রাজশাহী, খুলনা, রংপুর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা ও দেশের আরও কিছু এলাকার আবহাওয়া বেশি চরমভাবাপন্ন হতে পারে। এ সময় এসব এলাকার তাপমাত্রা দিনে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। অপরদিকে রাতে ও ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে নেমে যেতে পারে। মানে দিন ও রাতের তাপমাত্রার ভেতরে চরম ব্যবধান। এ ধরনের আবহাওয়াতে দুর্বল মানুষেরা জ্বর, সর্দি, কাশি, এলার্জিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এ ছাড়া আগামী ১৪ মার্চ থেকে বছরের প্রথম মৃদু তাপপ্রবাহ আসছে বলেও জানায় সংস্থাটি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ফের জামায়াতের সমালোচনা করলেন হেফাজত আমির

জবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতা হাসিবুলের প্রথম জানাজা সম্পন্ন

গণতন্ত্রে উত্তরণে বিশ্বের সমর্থন পাওয়া গেছে : মির্জা ফখরুল

আমরা পা ছেড়ে মাথার রগে ফোকাস করছি, মজার ছলে সর্ব মিত্র

নাটকীয় ম্যাচ জিতে টাইগারদের সিরিজ জয়

জবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যুতে হাসপাতালে ভিপি সাদিক কায়েম

হঠাৎ খিঁচুনিতে জবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

আবারও ইনজুরিতে ইয়ামাল

ঈদগাহের নামকরণ নিয়ে দ্বন্দ্ব, দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ

খুলনায় ছেলের হাতে বাবা খুন

১০

চাকসু নির্বাচন / ১৫ সেকেন্ডে দিতে হবে ১ ভোট

১১

‘ভোটের অধিকার না থাকায় শ্রমজীবীরা বেশি অমর্যাদার শিকার’

১২

এক গ্রামে ১১ জনের শরীরে মিলল অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ

১৩

থানায় জিডি করলেন সালাউদ্দিন টুকু

১৪

সংস্কৃতির ভেতরেই রাজনীতির সৃজনশীলতা নিহিত : দুদু

১৫

সাইফের চোখ বাঁচাতে প্রয়োজন ৩০ লাখ টাকা

১৬

সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ১৪৮ রান

১৭

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফর গণতন্ত্র ও মানবিক সংহতির বার্তা : প্রেস সচিব

১৮

বিরক্ত মেহজাবীন চৌধুরী

১৯

জামায়াত অন্তত ১৬০টি আসন পাবে : সাদ্দাম

২০
X