মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।
বুধবার (১৬ আগস্ট) ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক বিভাগের প্রধান ইসমাঈল হানিয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ শোক প্রকাশ করা হয়।
এদিকে শোক প্রকাশের একদিন পর মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) রাতে জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে হামাসের ওই বিবৃতিপত্র শেয়ার করেছেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদীও।
ওই পোস্টে তিনি জানান, ‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহর ইন্তিকালে #হামাস এর শোক প্রকাশ। হামাসের রাজনৈতিক বিভাগের প্রধান ইসমাঈল হানিয়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ করে লেখা শোক বার্তায় জানান, অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনার সঙ্গে দাঈ এবং সুবক্তা শায়েখ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর সংবাদ গ্রহণ করেছি। আমরা আল্লাহর ফয়সালা মেনে নিয়েছি। আল্লাহতায়ালা তার প্রতি রহম করুন, তাকে চিরস্থায়ী জান্নাত এবং সিদ্দিকদের বাসস্থানে সমাহিত করুন।’
‘আমরা আল্লাহর কাছে আশা করি, ইসলাম ও মুসলমান এবং বাংলাদেশ ও তার জনগণের খেদমতস্বরূপ আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। এমনিভাবে আপনাদের মাধ্যমে শায়েখের মৃত্যুতে আমরা শায়েখ সাঈদীর পরিবার, তার ছাত্র ও ভক্তবৃন্দ এবং বাংলাদেশি জনগণের প্রতি শোক ও সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, এর আগে ১৪ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তার আগে ১৩ আগস্ট বিকেলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত সাঈদীকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই রাতেই তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়।
সাঈদী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পিরোজপুর-১ আসন থেকে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় রাজধানীর শাহীনবাগের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা হয়। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। এরপর থেকে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছিল।
জানা গেছে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮২ সালে জামায়াতের রুকন (দলটির পূর্ণাঙ্গ সদস্য) হন। ১৯৮৯ সালে তিনি জামায়াতের মজলিশে শূরা সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাঈদী ২০০৯ সাল থেকে জামায়াতের নায়েবে আমিরের পদে ছিলেন।
মন্তব্য করুন