তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। চামড়া পোড়ানো তীব্র রোদ, গরম আর উত্তপ্ত বাতাস যেন সবকিছু পাল্টে দিয়েছে। জীবনের প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষেরা গরমে অতিষ্ঠ। সবচাইতে বিপদে খেটে খাওয়া মানুষ। ঘরের ভেতরও গুমোট অবস্থা। এর মধ্যে বিদ্যুৎ গেলে তো কথাই নেই, একেবারে নাজেহাল অবস্থা। এর মধ্যে আবহাওয়া অফিস দিলো বৃষ্টির সুখবর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রোববার (১১ মে) সিলেট বিভাগে দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী সোমবার (১২ মে) থেকে ধীরে ধীরে গরম কমে আসতে পারে। ওই দিন থেকে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার (১২ মে) ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা এক থেকে ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং রাতের তাপামাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পেতে পারে। চলমান তাপপ্রবাহ কিছু কিছু জায়গায় থেকে প্রশমিত হতে পারে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, আগামী সোমবার (১২ মে) থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ধীরে ধীরে তাপপ্রবাহ ১৮ বা ১৯ মের মধ্যে কমে আসতে পারে। এই সময়ে কালবৈশাখীরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শনিবার (১০ মে) সারাদেশে তাপপ্রবাহের যে বিস্তার হয়েছে তা চলতি বছরে দেখা যায়নি। তবে আগামী সোমবার (১২ মে) দিনে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে গরম সবচেয়ে বেশি। রোববারও (১১ মে) একই রকম তাপমাত্রা প্রবাহিত হবে।
শনিবার (১০ মে) চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন রাজধানীসহ আট জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। শনিবার (১০ মে) ঢাকায় বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গেল বছরের ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় দেশের ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপ প্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি ও এর ওপরের তাপমাত্রাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে দেশে তাপপ্রবাহ অপেক্ষাকৃত কম ছিল। মে মাসের শুরু থেকে তাপমাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। তবে গত বুধবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে।
মন্তব্য করুন