পরিচ্ছন্নতা খাতে নিয়োজিত স্যানিটেশন শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী ড. মেঘনাগুহ ঠাকুরতা। তিনি বলেছেন, মানবিক রাষ্ট্র গঠন ও পরিচ্ছন্ন নগর ব্যবস্থা বজায় রাখতে হলে স্যানিটেশন শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। শ্রমিকদের শ্রমের মর্যাদা রক্ষা ছাড়া কোনো টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মেঘনাগুহ ঠাকুরতা এ কথা বলেন।
বেসরকারি মানবাধিকার উন্নয়ন সংস্থা ‘পরিত্রাণ’ ও বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের যৌথ আয়োজনে এবং এভিনা আমেরিকাস ও ডেমোক্রেসি অ্যাট ওয়ার্ক ফান্ডের সহযোগিতায় স্যানিটেশন রাইটস ওয়ার্কার্স ইন বাংলাদেশ (এসডব্লিউআরবি) প্রকল্পের আওতায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পরিত্রাণের প্রকল্প সমন্বয়কারী উজ্জ্বল কুমার দাসের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণলাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব প্রদীপ হেলা, বাংলাদেশ মাইনরিটি রাইটস ফোরাম এবং জাতপাত বিলোপ কনভেনশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক ও সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট উৎপল বিশ্বাস, বাংলাদেশ দলিত পরিষদ ঢাকা বিভাগের সভাপতি চাঁনমোহন রবি দাস, মতুয়া সম্প্রদায়ের যুব নেতা সমীরণ মণ্ডল, স্যানিটেশন শ্রমিক নেতা উজ্জ্বল ডোম, গজনলালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শতাধিক স্যানিটেশন শ্রমিক নেতা।
বক্তারা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে কর্মরত প্রায় ১২ হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী স্যানিটেশন শ্রমিক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আরও প্রায় ২০ হাজার শ্রমিকের শ্রমের ন্যায্য সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিতের দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরেন। তারা নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, বেতন কাঠামোতে স্বচ্ছতা ও নিয়মিতকরণ এবং শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য বেসরকারি খাতে কঠোর নজরদারির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দফা দাবি পেশ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে স্থায়ী আবাসন ও নাগরিক স্বীকৃতি প্রদান, সরকারি আবাসনে শতভাগ বসবাস নিশ্চিত করা, পরিচ্ছন্নতা খাতে নিয়োগে স্থানীয় হরিজনদের অগ্রাধিকার ও কোটা বাস্তবায়ন, চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শ্রমিকদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তিকরণ, নারী শ্রমিকদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব বোনাস, পেনশন স্কিম, বীমা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার ও বরাদ্দ বৃদ্ধি। দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
মন্তব্য করুন