বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে ‘অন অ্যারাইভাল’ ভিসা নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তানের কূটনীতিক ও অফিশিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক চুক্তিটি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।’
বুধবার (২৩ জুলাই) পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন রাজা নাকভির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অভিন্ন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।’
এ সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সর্বাত্মক সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাস দমনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি। সেখানে আমরা ব্যর্থ হলে তা পাকিস্তানসহ সবার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। সে জন্য আমরা সবার সহযোগিতা চাই। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধান সমস্যা হচ্ছে মাদক, যা পার্শ্ববর্তী দেশ আফগানিস্তান থেকে পাচারের মাধ্যমে আসছে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশেরও অন্যতম প্রধান সমস্যা মাদক, যা আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে সাধারণত পাচার হয়ে থাকে।’
মাদক সমস্যা দূর করতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান পারস্পরিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বৈঠকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ প্রশিক্ষণে ২ দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। এ বিষয়ে দুই দেশের পুলিশ একাডেমির মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।’
মহসিন রাজা নাকভির সঙ্গে একমত পোষণ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের সারদা পুলিশ একাডেমি ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন পুলিশ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের নাগরিকত্ব দিচ্ছি না। তবে পাসপোর্ট দিচ্ছি। এই পাসপোর্ট ভিন্ন কোড বা সিরিয়াল নম্বরের হয়, যাতে তাদের রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত করা যায়।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা মানবতার খাতিরে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছি, যা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বোঝা।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইনে তাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনে পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মন্তব্য করুন