চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত চারুকলা প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত কয়েকটি চিত্রকর্ম নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে একটি চিত্রকর্মে রিকশাচালকের ছবিতে এবং দাবার ছকের ছবিতে দাঁড়িপাল্লা যুক্ত করা হয়েছে।
তবে চিত্রশিল্পী ও আয়োজকরা দাবি করেছেন এটি ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই চিত্রকর্মগুলো নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত, গত বছরের জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের স্যালুট দেওয়া আলোচিত রিকশাচালকের ছবিতে দাঁড়িপাল্লা যুক্ত হওয়ায় তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসীন ফেসবুকে এই প্রদর্শনীর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ছবিটি বিকৃত করা হয়েছে। মূল ছবিতে দাঁড়িপাল্লা ছিল না। এখন যদি জামায়াতের প্রতীক হিসেবে কিছু যোগ করা হয়, সেটা তো পরিষ্কার প্রচারণা। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের কোনো লেজুড়ভিত্তিক সম্পর্ক নেই। ক্যাম্পাসে কোনো প্রচারণাও করি না। তাহলে জামায়াতের প্রতীক কেন আমাদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে?
ছবির শিল্পী মেহেদী হাসান শুভ্র জানান, লেডি জাস্টিস ভাস্কর্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চিত্রকর্মটি তৈরি করেছেন এবং এর মাধ্যমে জনগণের হাতে বিচার প্রতিষ্ঠার বার্তা দিতে চেয়েছেন। এটি কোনো রাজনৈতিক প্রচার নয়।
চারুকলা প্রদর্শনীর আহ্বায়ক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী এই বিতর্কের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তারা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখেননি।
তিনি বলেন, আমরা শিল্পীর স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এখন যেহেতু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, আমরা রাতেই বৈঠক ডেকেছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন জানান, প্রদর্শনীতে প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না এবং শিক্ষার্থীরাই প্রতিযোগিতার জন্য তাদের কাজ জমা দিয়েছিল।
মন্তব্য করুন