গোপনে পারমাণবিক স্থানান্তর করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি যুক্তরাজ্যের একটি সামরিক ঘাঁটিতে এ ধরনের অস্ত্র স্থানান্তর করছে। ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) আল মায়াদিন টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিউকওয়াচ ইউকের উদ্ধৃতি দিয়ে ডিক্লাসিফাইড ইউকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র যুক্তরাজ্যের সাফোকের আরএএফ লেকেনহিথ ঘাঁটিতে স্থানান্তর করেছে। মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি ফ্লাইটে এসব স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৭ জুলাই মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি সি-১৭ গ্লোবমাস্টার পরিবহন বিমান লেকেনহিথ ঘাঁটিতে অবতরণ করে। এতে ২০টি অত্যাধুনিক বি৬১-১২ পারমাণবিক বোমা পরিবহন করা হয়েছে। এসব বোমার প্রতিটির ধ্বংসক্ষমতা হিরোশিমায় ব্যবহৃত বোমার চেয়েও তিনগুণ বেশি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিবহনের এই কার্যক্রমটি নজরদারি করে বিশেষ পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা নিউকওয়াচ ইউকে। তারা জানিয়েছে, বিমানটি ১৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের লুইস-ম্যাকচোর্ড বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। পরে এটি নিউ মেক্সিকোর কির্টল্যান্ড বিমানঘাঁটিতে থামে। এটি মার্কিন বিমানবাহিনীর সবচেয়ে বড় পারমাণবিক সংরক্ষণাগার ও রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কির্টল্যান্ডে বিমানটি একটি নির্দিষ্ট বিপজ্জনক পণ্যের জন্য নির্ধারিত জায়গায় অবস্থান করে এবং সেসময় কড়া নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়। বিমানচালক এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে বিপজ্জনক মালামাল পরিবহনের বিষয়টি জানান।
এতে বলা হয়েছে, বিমানটি রাতের বেলায় আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়। যাত্রাপথে এটি দুটি কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমানের মাধ্যমে জ্বালানি গ্রহণ করে। আরেকটি সি-১৭ বিমান একই সময়ে ছেড়ে যায় সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে এবং জার্মানির রামস্টেইন ঘাঁটি হয়ে লেকেনহিথে পৌঁছায়। বিমানে পারমাণবিক জরুরি সরঞ্জাম বহন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, লেকেনহিথে অবতরণের পর বিমানটিকে ‘ভিক্টর র্যাম্প’ নামক বিপজ্জনক সামগ্রী হ্যান্ডলিং জোনে রাখা হয়। চারপাশে মার্কিন সামরিক বাহিনীর কড়া পাহারা, গোপন এজেন্টদের টহল এবং ফায়ার টিম মোতায়েন করা হয়। এরপর বিশেষায়িত মেশিনের সাহায্যে পারমাণবিক অস্ত্রগুলো একটি সুরক্ষিত বিমানঘাঁটির শেল্টারে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ডিক্লাসিফায়েড ইউকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই অস্ত্রগুলো যুক্তরাজ্যে থাকলেও এগুলোর উপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে। এগুলো যুক্তরাজ্যের সম্মতি ছাড়াই ব্যবহৃত হতে পারে।
মন্তব্য করুন