বিশ্ব হার্ট দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় তিন লক্ষাধিক ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ জন্য সরকার ও চিকিৎসকদের সমন্বিত প্রয়াস দরকার। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, মানসিক চাপ ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে আমরা আমাদের এই মহামূল্যবান অঙ্গটিকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছি।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেডের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও ম্যাগাজিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।
মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম হানিফ মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব প্রফেসর ড. মো. শহিদুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন- মাতৃভূমি হার্ট কেয়ার লিমিটেডের সিইও ডা. এমএম রহমান।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে বক্তব্য দেন ডক্টরস ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আশরাফ আলী, ইবনে সিনা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও হার্ট বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মফিজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগের সাবেক পরিচালক ড. আব্দুল হান্নান, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সাবেক সিইও ডা. আমির হোসেন, হরমোন ও মেটাবলিজম বিশেষজ্ঞ ডা. সাকিরা নোভা।
মাতৃভূমি হার্ট কেয়ারের পক্ষ থেকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সরকারের কাছে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- ১। দেশের সব গণমাধ্যমে বাধ্যতামূলক হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত প্রচার করা। ২। সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপানে নিরুৎসাহিত করতে সরকারি-বেসরকারি সব অফিসে স্বাস্থ্য কর্নার চালু করা। ৩। উপজেলা ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে আরও উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাতৃভূমি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. মাইনউদ্দিন মিয়া। তিনি তার বক্তব্য বলেন, আমাদের হাসপাতাল মূলত সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। মানব দেহের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হৃৎপিণ্ড অর্থাৎ হার্ট, যা বিকল হলে মানুষ বাঁচে না। সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার মানসিকতা থেকে এ হাসপাতাল আমরা গড়ে তুলেছি। ইতোমধ্যে প্রাকৃতিক বাইপাস পদ্ধতির এই চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়মিত রোগীরা সুস্থতা পাচ্ছে। বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে আজকের এই আলোচনা সভায় সরকারকে বলতে চাই, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে আমাদের মতো এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলন করে সাধারণ মানুষকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেনিথ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এমডি মো. নুরুজ্জামান মিয়া, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. শাহরুখ আদনান।
মন্তব্য করুন