বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে সনাতনীসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যৌক্তিক দাবি-দাওয়াসমূহ ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি। মন্দির পরিদর্শন ছাড়াও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সালাহউদ্দিন।
সনাতনীসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আপনাদের কিছু দাবি-দাওয়া আমাদের সামনে আগেও দেওয়া হয়েছিল। আমরা এগুলো বিশ্লেষণ করেছি। এ নিয়ে আগেও আপনাদের সাথে কথা হয়েছে। বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের সময়ে আপনাদের নেতাদের সাথে আলোচনা করে আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে আপনাদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়াগুলো ধারণ করব। যেমন দেবোত্তর সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি, সংখ্যালঘু কমিশন-ফাউন্ডেশন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা। দেবোত্তর ও অর্পিত সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে সেগুলো উদ্ধার করে মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা, এগুলো সবই সম্ভব। এ বিষয়গুলো আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ধারণ করব।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, এ দুর্গাপূজা শুধু একটি উৎসব নয়; এটি অশুভ শক্তি অসুরের বিনাশের জন্য একটি লড়াই এবং শুভ শক্তি, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার একটি বার্তা।
সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে অশুভ শক্তি ফ্যাসিবাদী অসুরের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। লড়াইয়ের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, অশুভ শক্তি অসুরের বিদায় হয়েছে। তবে আমি মনে করি, এখনো বিনাশ হয়নি। এখন আমাদের সময় ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার এবং সাম্য ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধশালী-শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আমরা যারা বিএনপি করি, আমরা যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি, আমরা ধর্মের ভিত্তিতে জাতিতে কোনো বিভক্তি চাই না। আমরা ধর্মের ব্যবহার করে ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাই না, কখনো চাইনি। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। সাংবিধানিকভাবে আমরা সবাই সিটিজেন; এখানে কেউ যেন আমরা সম্প্রদায় না হই, আমরা যেন সবাই সিটিজেন হই। সাংবিধানিকভাবে সিটিজেনের যেসব অধিকার উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করাই হবে আমাদের লক্ষ্য। আমাদের সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য নেই।
এ সময় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেবসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ূম, জেএসডির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী জনশক্তি পার্টির মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম, বাংলদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে-সহ অন্যরা ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য করুন