

বাংলাদেশের যুবসমাজ দেশের অভিবাসন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত আজকের জাতীয় সংলাপে বক্তারা বলেন, তরুণদের চিন্তা, অভিজ্ঞতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো গেলে ভবিষ্যতের জন্য আরও কার্যকর ও বাস্তবসম্মত অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
আলোচনায় উঠে আসে, বিশ্বের মোট অভিবাসীদের একটি বড় অংশই যুবক। তাই নিরাপদ অভিবাসন পথ তৈরি এবং শক্তিশালী অভিবাসন ব্যবস্থাপনা গঠনে তরুণদের অভিজ্ঞতা অপরিহার্য। বৈশ্বিক ফোরামগুলোও এখন অভিবাসন শাসনব্যবস্থায় যুব অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রায় ১.৮ বিলিয়ন তরুণের দৃষ্টিভঙ্গি অভিবাসন নীতি ও আখ্যানকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলতে পারে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), বাংলাদেশ সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহায়তায় ইয়ুথ এন্ড মাইগ্রেশন: ভয়েস, ভিশন এন্ড একশন’ (যুব ও অভিবাসন: অভিমত, দূরদৃষ্টি এবং পদক্ষেপ) শীর্ষক এই জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এতে তরুণ সামাজিক নেতৃবৃন্দ, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন এবং বাংলাদেশের অভিবাসন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণদের ভূমিকা তুলে ধরেন।
আসন্ন আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২৫ এর বৈশ্বিক প্রতিপাদ্য ‘মাই গ্রেট স্টোরি: কালচারস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (আমার গল্প : সংস্কৃতি ও উন্নয়ন) সামনে রেখে আয়োজিত এই সংলাপ অভিবাসন কথোপকথনের কেন্দ্রবিন্দুতে তরুণদের নিয়ে আসা এবং নীতি, এডভোক্যাসি কার্যক্রম ও কমিউনিটি নেতৃত্বে তাদের সম্পৃক্ততা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেয়।
দুটি প্যানেল আলোচনায় তরুণদের কীভাবে অভিবাসন শাসনব্যবস্থায় আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা যায় এবং উদ্ভাবন, নেতৃত্ব ও কমিউনিটি উদ্যোগের মাধ্যমে তারা কীভাবে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখে তা নিয়ে আলোচনা হয়। বক্তারা নিরাপদ অভিবাসন প্রচারে সাংস্কৃতিক উদ্যোগ, শ্রমবাজারে প্রভাব এবং সামগ্রিকভাবে তরুণদের ক্ষমতায়নের বিষয়েও মতবিনিময় করেন। আলোচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুব নেতৃত্বাধীন সংগঠন, শিক্ষাবিদ, জাতিসংঘের সংস্থা, জাতিসংঘ ইয়ুথ অ্যাডভাইজরি গ্রুপ (YAG) এবং উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ল্যান্স বোনো, মিশন প্রধান, আইওএম বাংলাদেশ; সাদমান সাকিব, সহকারী সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়; হাবিবুল্লাহ তামীম, সিনিয়র ম্যানেজার, বিওয়াইএলসি; রাহনুমা সালাম খান, ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার, আইএলও; এবং কামরুল কিবরিয়া আয়ন, সিনিয়র ম্যানেজার, রিসোর্স মোবিলাইজেশন অ্যান্ড গ্রান্টস ম্যানেজমেন্ট, জাগো ফাউন্ডেশন।
এই সংলাপের মাধ্যমে তরুণদের নিয়ে একাধিক উদ্যোগের সূচনা হলো। এর মধ্যে রয়েছে আসন্ন ‘যুব ও অভিবাসন পরিকল্পনা’ এবং সারা দেশে নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য একটি বৃহৎ প্রচারণা। জাতিসংঘের ইয়ুথ-২০৩০ কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই উদ্যোগগুলো গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব কার্যক্রম উদ্ভাবন, সামাজিক সম্প্রীতি ও ন্যায়সঙ্গত অভিবাসন নিশ্চিত করতে তরুণ সম্পৃক্ততার পথ আরও প্রসারিত করবে। তরুণদের অংশগ্রহণ অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও জবাবদিহিমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে এবং ভবিষ্যতের চাহিদার সঙ্গে মানানসই করবে।
মন্তব্য করুন