

ঢাকায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বুধবার (১৯ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম (ওইপি) চালু করেছে। এটি বাংলাদেশে নিরাপদ অভিবাসন ও ন্যায্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। এটি একটি ডিজিটাল গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে, যেখানে বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মী, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি, বিএমইটি, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, নিয়োগকর্তা, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন সংস্থাগুলো একসঙ্গে যুক্ত হতে পারবে।
ওইপি ব্যবহার করে অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে। এটি দালালদের ভূমিকা কমাতে এবং কর্মীদের জন্য অভিবাসন খরচ হ্রাসে সাহায্য করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড মি. ডেইপাক এলমার, এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনন। বিভিন্ন দূতাবাস, উন্নয়ন সংস্থা, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি, শ্রমিক ও নিয়োগদাতা সংগঠন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও উপস্থিত ছিলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘নিরাপদ, স্বচ্ছ এবং কার্যকর অভিবাসনের জন্য এই প্ল্যাটফর্মটি একটি বড় পদক্ষেপ। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আমরা চাই তাদের যাত্রা হবে নিরাপদ, সুরক্ষিত ও সম্মানজনক।’
পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, ‘ওইপি গন্তব্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের শ্রম চুক্তি আরও মজবুত করবে। এটি অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়াবে এবং নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ম্যাক্স টুনন বলেন, ‘ওইপি ন্যায্য নিয়োগ নীতি বাস্তবায়নের একটি কার্যকর উপায়। এটি তথ্য ও সেবাকে এক জায়গায় আনে, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিকে তদারকি সহজ হয়, কর্মীরা নির্ভরযোগ্য তথ্য পায় এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া নিরাপদ ও নিয়মিত হয়।’
মি. ডেইপাক এলমার বলেন, ‘শুধু প্রযুক্তি দিয়েই সমস্যা সমাধান হবে না। প্ল্যাটফর্মের সাফল্য নির্ভর করবে সবাই কতটা দায়বদ্ধতার সঙ্গে এটিকে ব্যবহার করে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নিয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া, যিনি বলেন, ‘ওইপি শুধু একটি প্রকল্পের সমাপ্তি নয়, এটি নতুন পর্যায়ের সূচনা। আমরা প্ল্যাটফর্মটি আরও উন্নত করব এবং অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করে অভিবাসী কর্মীদের নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য যাত্রা নিশ্চিত করব।’
শেষে বক্তারা আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, ওইপির মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম অভিবাসনে নিরাপদ, নিয়মিত ও ন্যায্য প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন