এক চুমুকেই মুহূর্তের মধ্যে ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলে যাচ্ছে। মাঠে নেমেই চার, ছক্কা, হিট, ফিট, একটু বেশি... ধুম ধারাকা অফারসহ এবং পণ্যের নামের বানান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ভবনে বিএফএসএ আয়োজিত ‘প্রক্রিয়াজাত খাবারের পুষ্টি ও মোড়কজাতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘টেলিভিশন, পত্রিকা বা অন্যান্য মাধ্যমে অতিরঞ্জিত কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। বিজ্ঞাপনের নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। অতিরঞ্জিত যেসকল বিজ্ঞাপন আছে সেগুলোও সরাতে হবে।’
আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের জেল জরিমানার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য নয়। তবে কর্তৃপক্ষ কখনো খাদ্যের গুণমান নিয়ে আপোষ করবে না। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য খাদ্যের নিরাপদতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে ব্যবসায়ের সম্প্রসারণ।’
তিনি বলেন, ‘খাদ্য অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে, যেটা নিরাপদ না সেটিকে কখনোই খাদ্য বলা যাবে না। আপনি যখন কোন পণ্য বিক্রি করবেন সেটা সম্পূর্ণ নিরাপদ নিশ্চিত হয়েই বিক্রি করতে হবে এবং মোড়কজাতকরণ (লেবেলিং) মাধ্যমে খাদ্যের উপাদান এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সবকিছু জানাতে হবে। কারণ ভোক্তার অধিকার আছে সে কী খাচ্ছে এবং তাতে কী পুষ্টিগুণ আছে সেগুলো জানার। ভোক্তা যদি তার খাবারে লেবেলিংয়ের সঠিক পুষ্টিগুণ না পায় তাহলে কিন্তু ভোক্তা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে।’
পণ্যের পুষ্টিগুণ এবং খাদ্যে ব্যবহৃত উপাদান সম্পর্কে লেবেলিংয়ে বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষায় স্পষ্ট অক্ষরে লেখা থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পণ্যের লেবেলিং এ সকল তথ্য দিতে হবে। বিভিন্ন খাবারে এলার্জি থাকে, তাই খাবারে এলার্জি আছে কিনা তা হাইলাইট করে লিখতে হবে। কোন খাবারে নিউট্রিশন, ফ্যাট, লবণ, চিনি কী পরিমাণে আছে তা বড় করে লিখতে হবে, যাতে সহজেই দেখা যায়। যদি ইংরেজিতে কেউ লেবেলিং করে তাকে বাংলায়ও একই তথ্য লিখতে হবে।’
আলোচকরা বলেন, নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে আমাদের কী শুধু জ্ঞানের বা প্রশিক্ষণের অভাব? আসলে কিন্তু তা না। আমরা অনেকে জেনে-শুনে বাণিজ্য বা বেশি অর্থ লাভের আশায় অনিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করে থাকি। আসলে আমাদের নৈতিকতার অভাব। এই নৈতিকতার জায়গাগুলো যদি নিজেরা নিজেদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে না পারি তাইলে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ সম্ভব না।’
কর্তৃপক্ষের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আবু নূর মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য মো. রেজাউল করিম। এ ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্য পণ্য প্রস্তুতকারক ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তা এবং এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন