মশা মারতে গিয়ে মানুষ মেরে ফেলা যাবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সবাইকে একটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে, কীটনাশক যত বেশি ব্যবহার করবেন, ততবেশি পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য আমি প্রথম থেকে বলেছি, মশা মারতে গিয়ে মানুষ মেরে ফেলা যাবে না। এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
রোববার (৮ অক্টোবর) বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চলমান ডেঙ্গুবিরোধী অভিযানে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় সরকার সফল হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, একজন মানুষও যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয়, তাহলে সফলতা দাবি করা যায়। আমার অবস্থান থেকে সফলতা তখনই দাবি করতে পারব, যখন একজন লোকও আক্রান্ত হবে না। যেহেতু আক্রান্ত হচ্ছে, সেহেতু সফলতা দাবি করা যাবে না।
তিনি বলেন, এডিস মশা মূলত মানুষের বাসাবাড়িতে জন্ম নেয়। নদী-নালা, খাল-বিল, নালা-নর্দমা অথবা আবর্জনায় সাধারণত এডিস মশার জন্ম হয় না। ৯৯ শতাংশ মশার প্রজনন যেহেতু ঘরের ভেতরে বা পাশের অবকাঠামোতে হয়, সেহেতু আমরা বছরের প্রথম থেকে সিটি করপোরেশনকে সঙ্গে নিয়ে মশা নিধনের কাজ করছি। জানুয়ারি মাসে আমরা সিটি করপোরেশনের সক্ষমতা, লোকবল, যন্ত্রপাতি, কীটনাশক, ওষুধ ও ব্যবস্থাপনা যাচাই করি। তারা কতটুকু কাজ করছে সেটি আমরা নিয়মিত মনিটরিং করি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের একটি সেল রয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আগে জানুয়ারি মাস থেকে বৃষ্টি হতো। আমাদের ক্লাইমেট চেঞ্জের কারণে এখন অক্টোবর মাসেও বৃষ্টি হচ্ছে। জুলাই-আগস্ট মাসে সামান্য বৃষ্টি হয়েছিল। এডিস মশা প্রজননের জন্য অল্প বৃষ্টিই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। কারণ, কম পানির আধার এডিস মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। সাধারণত অক্টোবর মাসে এডিস মশা হ্রাস পায়। কিন্তু এ বছর অক্টোবর মাসে গ্লোবালি এডিস মশার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের এখানে এটাকে মোকাবিলা করার জন্য দুই সিটি করপোরেশন কাজ করছে।
এডিস মশা মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় হাতিয়ার জনগণকে সচেতন করা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টিভিসি তৈরি করে টেলিভিশনে প্রচার করেছি। আমাদের সিটি করপোরেশন জনগণকে নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিটিং করেছে এবং ইমাম সাহেবরা যাতে মসজিদে সচেতন করেন সেটি বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এতে জনগণের সচেতনতার মাত্রা বেড়েছে। ঢাকায় আগে যেখানে ২ থেকে আড়াই হাজার ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যেত, সেখানে এখন ৬০০-৭০০ তে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু ঢাকা শহর থেকে যে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে ২০১৯ সাল থেকে এতে আমাদের কোনো দ্বিমত ছিল না। যে কারণে আমি একটি পলিসি তৈরি করেছি, যেন সারা দেশকে কাভার করে। সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে যাবে এটা স্বাভাবিক। কারণ গ্রামে নগরায়ণ হয়েছে। এডিস মশাকে এলিট মশা বলা হয়। কারণ এটি ঘরের ভেতরে জন্ম নেয়। বাইরে করে না।
মন্তব্য করুন