আগামী বছরের মার্চ মাসে ইতালির রোম শহরে ফ্লাইট শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা-টরেন্টো, ঢাকা-নারিতা ও ঢাকা-চেন্নাই ফ্লাইট চালুর পর এবার ঢাকা-রোম ফ্লাইটের ঘোষণা এলো রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এ উড়োজাহাজ সংস্থার পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও শফিউল আজিম এক সংলাপে ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালুর তথ্য জানান।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ট্রেনিং সেন্টারে ‘এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি)’ ওই সংলাপের আয়োজন করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বোয়িং কেনার যে প্রস্তাব এসেছে, তা নিয়েও প্রশ্নের জবাব দেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শফিউল আজিম বলেন, ‘আমাদের একটা অপূর্ণতা- ইউরোপে আমাদের কোনো রুট নেই। তবে এই অপূর্ণতা আর বেশি দিন থাকবে না। আগামী মার্চের মধ্যে ইতালির রোমে বিমান ফ্লাইট শুরু করবে।’
সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিমান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে নতুন মডেলের ড্রিমলাইনার কেনার জন্য বিমানকে প্রস্তাব দিয়েছেন। সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি রয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকারের শেয়ার রয়েছে। ব্যবসায়িক দিক থেকে আমাদের প্রতিষ্ঠান যেখানে লাভবান হবে, যারা সুযোগ-সুবিধা বেশি দেবে, ভালো ব্যবহার করবে, তাদের সঙ্গে আমরা ব্যবসা করব।’
‘যারা আমাদের কাছে ব্যবসার প্রস্তাব নিয়ে আসে, যারা ভালো প্রস্তাব দেন, তাদের আমরা স্বাগত জানাই। আর যদি প্রস্তাব ভালো না হয়, তাহলে গ্রাহক হিসেবে আপনি যা করেন আমিও তাই করি’-বোয়িং কেনার প্রস্তাবের বিষয়ে যোগ করেন শফিউল আজিম।
ওই সংলাপে বিমানের আয়-ব্যয় নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বলেন, ডলারের বিনিময় হার বাড়ার কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গত এক বছরে ১৪০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত বছরও আমরা লাভে ছিলাম, এ বছরও লাভে থাকব। তবে ডলার এক্সচেঞ্জ রেটের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। যেখানে আগে ১ ডলারের বিপরীতে ৮৫ টাকা দিতে হতো, এখন দিতে হচ্ছে ১১৬ টাকা। এটা বিশ্বব্যাপী ক্রাইসিস। বিগত অর্থবছরে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে ১৪০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে মুনাফা কম হলেও বিমানে লাভে থাকবে। এ মাসের শেষের দিকে এজিএম হবে, সেখানে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।’
এদিকে ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের পরিচালক (মার্কেটিং) মো. সালাউদ্দিন বলেন, রোম বিমানের অনেক পুরোনো রুট ছিল। উড়োজাহাজ স্বল্পতার কারণে ২০০৯ সালে এই রুটে ফ্লাইট বন্ধ করতে হয়। তবে এখন রোমে ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্য যা যা করণীয়, তাই করা হচ্ছে। রুট পরিচালনার জন্য যে মার্কেট স্ট্র্যাটেজি করা প্রয়োজন সেটাও করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে রোমে সরাসরি ফ্লাইট, না কি ট্রানজিট হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত দুটি অপশনকে বিবেচনা করছি। হয়ত আমরা ঢাকা থেকে রোম সরাসরি যাব, নয়তো ভায়া কোনো জায়গায় হয়ে যাব। রোমের ফ্লাইট আমরা ড্রিমলাইনার দিয়ে পরিচালনা করব।’
সংলাপে এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সবুজের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি তানজিম আনোয়ার।
মন্তব্য করুন