রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার (৫ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ের পেছনে হাতিরঝিলের পানি নিষ্কাশন যন্ত্র পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে যেতে হবে। তা না হলে আমরা সাময়িক সময়ের জন্য এলাকাবাসীকে সুফল দিতে পারলেও, দীর্ঘমেয়াদি সুফল দিতে পারব না।
মেয়র বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত রাখতে চাই। এজন্য ঢাকা ওয়াসা থেকে খাল এবং নর্দমা সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করার পর ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আমরা যেমন নিয়মিত বার্ষিকভিত্তিতে সেগুলো পরিষ্কার করছি, তেমনি নিজস্ব অর্থায়নে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ করেছি, জলাধারের আয়তন বৃদ্ধি করেছি। তারপরও আমরা লক্ষ্য করেছি, গত ঈদুল আজহার সময় যে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে ঢাকার কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যা দীর্ঘক্ষণ ছিল। এ সমস্যাকে সমাধান করার জন্য আমরা কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করব। তার মধ্যে প্রথম আমরা আজকে সোনারগাঁও হোটেলের পেছনে যে জলাধার রয়েছে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজউক এবং ওয়াসা কর্তৃক নির্মিত ‘স্ট্রং সুয়ারেজ ডাইভার্সন স্ট্যাকচার’ (এসএসডিএস) পরিদর্শনে এসেছি।
তিনি বলেন, এই এসএসডিএসের কারণে পান্থপথ বক্স কালভার্ট দিয়ে পানি নিষ্কাশনের বা প্রবাহের যে গতিধারা, সেটি রোধ হয়ে গতি কমে যাচ্ছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। এজন্য আমরা সরেজমিনে এটি পরিদর্শনে এসেছি। কারণ পান্থপথ বক্স কালভার্ট দিয়ে একটি বৃহৎ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মেয়র তাপস বলেন, এখানে তিনটি স্লুইস গেটের মতো রয়েছে। এর একটিও যদি বন্ধ থাকে, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে, তাহলে পানিপ্রবাহের গতি হারায়। ফলে কাঁঠালবাগান, গ্রিন রোড এবং ধানমন্ডি ২৭ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা বিস্তৃত হয়। এজন্য আমাদের সুদূরপ্রসারী এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থাপনায় আসতে হবে।
এক গণমাধ্যমকর্মীর প্রশ্নের জবাবে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমরা দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র দুই বছর হয়েছে। এর মধ্যে আমরা ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্পমেয়াদি কার্যক্রম নিয়েছি। এখন আমরা মধ্যমমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় যাব। এজন্য এসব অবকাঠামোগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। যাতে এর কোনো ক্ষতি না হয় এবং সুষ্ঠুভাবে কার্যকর হয় সেটি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সারবীন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী সফিউল্লাহ সিদ্দিক ভূঁইয়া, মিঠুন চন্দ্র শীল, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন