বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো, শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীনের জানাজা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তার মরদেহ আনা হয়।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার নেতৃত্বে একাডেমির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রয়াত খালেক বিন জয়েনউদদীনের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনে অংশ নেন- বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, কাব্যকথা সাহিত্য পরিষদ, আবদুস শহিদ সংসদের নেতারা। এ ছাড়া আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলা একাডেমির ফেলো আসলাম সানী, রহীম শাহ, সুজন বড়ুয়া, বিমল গুহসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা।
এ সময় প্রয়াত লেখকের জীবন ও কর্ম নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন এবং প্রকাশক আলমগীর সিকদার লোটন।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে খালেক বিন জয়েনউদদীনের জানাজা পরিচালনা করেন একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর।
রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে নিজ ফ্ল্যাটে ঘুমন্ত অবস্থায় রবিবার (১৪ জানিুয়ারি) রাতে মারা যান জয়েনউদদীন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
তার জন্ম ২৪ জানুয়ারি ১৯৫৪ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামে। বাবা আলহাজ মো. জয়েনউদদীন । বাংলা সাহিত্যে তিনি ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমএ পাস করেন। খালেক বিন জয়েনউদদীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে যশোরের বারোবাজারে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে ধরা পড়ে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হন। সাত মাস তাকে বন্দি করে রাখা হয়।
খালেক বিন জয়েনউদদীন দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের ফিচার বিভাগের ‘কচি-কাঁচার আসর’ পাতাটি সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন।
শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো- ধান সুপারি পান সুপারি, আপিল চাপিল ঘন্টি মালা, চিরকালের ১০০ ছড়া, হৃদয় জুড়ে বঙ্গবন্ধু, নলিনীকান্ত ভট্টশীল, হুমায়ুননামা, মায়ামাখা শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেল।
সাহিত্যচর্চার জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পরিষদ, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, অগ্রণী ব্যাংক, সাউন্ডবাংলা সম্মাননা, তরিকত মিশন, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ স্মৃতি পরিষদ, কোটালীপাড়া গুণীজন সংবর্ধনা পেয়েছেন।
গ্রামের বাড়ি কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়ায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
মন্তব্য করুন