ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪, ১০:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ফিলিস্তিনের অবস্থাও আলোচনায় আনতে হবে’

ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা। ছবি : সংগৃহীত
ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেছেন, আমরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি। মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। ফিলিস্তিনের অবস্থাও যে এ রকম, সেটা আমাদের গণ্য করতে হবে, সেটাও আমাদের আলোচনার মধ্যে আনতে হবে।

শনিবার (২ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন সংলগ্ন ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে ঐতিহাসিক ‘পতাকা উত্তোলন দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, পৃথিবীতে কিছু রাষ্ট্র আছে, আর কিছু টেরিটরি বা ভূখণ্ড আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড। ফিলিস্তিনের আলাদা একটি পতাকা আছে। পতাকা মানুষের, দেশের বা রাষ্ট্রের পরিচয় দেয়। কিন্তু, ফিলিস্তিনিদের কোনো রাষ্ট্র নেই।

তিনি বলেন, ইসরায়েলে হামাস আক্রমণ করার সাথে সাথে ফিলিস্তিনে অর্থাৎ গাঁজা উপত্যকায় ত্রিশ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১০০ বছর ধরে এই সংঘাত চলছে। আমরা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি। মুক্তিযোদ্ধারা এই দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। ফিলিস্তিনের অবস্থাও এ রকম যে, সেটা আমাদের গণ্য করতে হবে, সেটাও আমাদের আলোচনার মধ্যে আনতে হবে। তাদের এই আন্দোলনকে আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাই।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেন, স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিলেন। আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উদ্যোগের ফলে ফিলিস্তিনের ইয়াসিন আরাফাতকে, দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলাকে আমরা এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখেছি। কাজেই, যেই আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু সমর্থন দিয়েছেন, সেটাতে আমাদেরও সমর্থন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের পরে ফিলিস্তিনে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাঠিয়েছিলেন যুদ্ধ করার জন্য। আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যা সারা পৃথিবীতে, ইউরোপে গিয়ে, বাংলাদেশের পার্লামেন্টে এবং বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনে ক্রমাগত এই ফিলিস্তিনের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের এই সংগ্রামের বিষয়টা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করতে হবে। আমরা কি দুঃসহ অবস্থানের মধ্যে ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের সময়, এই প্রজন্মের মানুষের কাছে তা গল্প এবং সিনেমা। আমরা যারা যুদ্ধ দেখেছি বা যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ছিলেন, তারা কি বীভৎস দৃশ্য দেখেছি। আমরা দড়ি দিয়ে হাত-পা বাঁধা মানুষের লাশ দেখেছি, লাশগুলো এদিক-সেদিক পড়ে আছে, আবার নগ্ন দেহ নদীতে ভেসে যাচ্ছে। কাজেই আমি বলতে চাই, ফিলিস্তিনের যে অবস্থা আমাদেরও কিন্তু সেই অবস্থাই ছিল। এজন্য আমরা, পতাকা দিবসে ফিলিস্তিনের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন জানাই।

পতাকা উত্তোলনের পটভূমি তুলে ধরে অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পতাকা উত্তোলন দিবসের তাৎপর্য অপরিসীম। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনাদর্শ, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশ ও জাতির গৌরবগাথা ইতিহাস, ঐতিহ্য, অর্জন এবং বিভিন্ন দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা, কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রফিকুল আলম।

এছাড়া, সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিশেষ নির্দেশনা

লঞ্চ থেকে জব্দ ২০০ কেজি জাটকা গেল এতিমখানায়

ওষুধ ভেবে ইঁদুর মারার ট্যাবলেট খেয়ে দুই বেয়াইয়ের মৃত্যু

অগ্নিদগ্ধ রোগী দেখতে যাওয়ার পথে হামলা, আহত ৫

২ জেলার দুই নেতাকে সুখবর দিল বিএনপি

জুলাই শহীদ আবুল হাসান স্বজনের কবর জিয়ারত মাসুদুজ্জামানের

যুবদলের ২ নেতাকে বহিষ্কার, একজনকে শোকজ

সাংবাদিক শওকত মাহমুদ কারাগারে, রিমান্ড শুনানি বৃহস্পতিবার

যে কারণে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ হবে

স্বাস্থ্যসেবায় নারী চিকিৎসকদের অগ্রগতির বাধা চিহ্নিত করতে চমেকে সেমিনার

১০

রাতে হঠাৎ আগুন, দশটি বসতঘর পুড়ে ছাই

১১

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত, সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?

১২

২৩ বছর ছদ্মবেশে থেকেও রক্ষা পেলেন না হাফিজ

১৩

ঢাকায় নতুন হুন্ডাই ক্রেটা গ্র্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

১৪

পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

১৫

ফের রিমান্ডের খবরে নাসার নজরুল বললেন ‘হার্ট অ্যাটাক করব’

১৬

প্রাণিসম্পদ অফিসে দুর্ধর্ষ চুরি

১৭

স্ত্রীর মরদেহ বাথরুমে লুকিয়ে রাখে স্বামী, অতঃপর...

১৮

ঘরে মাকড়সার জাল থাকলে কি অভাব-অনটন দেখা দেয়?

১৯

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে সুখবর দিলেন গভর্নর

২০
X