দেশে গত এক দিনে নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১২৩৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন; তাতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ হাজার। আর গত একদিনে মৃত্যু হয়েছে আরও পাঁচ ডেঙ্গু রোগীর।
গত তিনদিন ধরেই দৈনিক হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। মঙ্গলবারে এই সংখ্যা ছিল ১০৫৪ জন, আর বুধবার ভর্তি হন ১২৪৬ রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যে ১২৩৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৫৬ জন ঢাকায়, বাকি ৪৮৩ জন ঢাকার বাইরের।
নতুন রোগীদের নিয়ে এ বছর সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭ হাজার ৩৮২ জনে। একদিনে মৃত পাঁচজনকে নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ৯৩ জন। ডেঙ্গু আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪০৬৯ জন রোগী। এদের মধ্যে ঢাকায় ২৭০৮ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৩৬১ জন।
এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, মৃত্যু হয়েছিল ৩৪ জনের।
সেখানে জুলাইয়ের প্রথম ১৩ দিনেই ৯৪০৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের।
মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১০৩৬ জন এবং জুন মাসে ৫৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা পূববর্তী জরিপের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার ঝুকিপূর্ণ উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।
এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।
মন্তব্য করুন