বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি বলেছেন, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই অত্যন্ত সতর্ক রয়েছে বিএনপি। সারা দেশে সংঘটিত নানা নৈরাজ্য, হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, দখল, চাঁদাবাজির ঘটনা বন্ধে তারা নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং তা তীক্ষ্ণ নজরদারিতে পালনও করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একদিকে নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স; অন্যদিকে সারা দেশে থানা-উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাতদিন পাহারা বসিয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। যারাই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হবেন, তাদের বিরুদ্ধেই দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর সাইন্সল্যাব, ধানমন্ডি-৭ ও ৮, শুক্রবাদ, কলাবাগান, ধানমন্ডি-৩২ এবং ধানমন্ডি-২৭ হয়ে শংকর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান পরবর্তী পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ রবি এ কথা তিনি বলেন। এ সময় শান্তি পদযাত্রায় যোগ দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক নেতা প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
রবিউল আলম বলেন, দলের নেতাকর্মীদের বিষয়ে রয়েছে আরও কঠোর সতর্কবার্তা। কারও ন্যূনতম সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হবে। দল ইতোমধ্যেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছে, যা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নাগরিকদের সম্পদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। সমাজকে বিভক্ত করাই এ মুহূর্তে তাদের ষড়যন্ত্র। তবে বিএনপি এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে। ইতোমধ্যেই সাধ্যমতো সব পদক্ষেপ দলের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দলের নাম ব্যবহার করে কেউ যদি এ ধরনের অপতৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।
রবিউল আলম নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যেই বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে আরও বেশ কয়েকজনকে।
তিনি ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগান ও নিউমার্কেট) এলাকায় ‘দলমত, ধর্ম-বর্ণ, পেশা নির্বিশেষে যে কোনো বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতা করা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো নিরাপদ রাখার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিজ নিজ পাড়া-মহল্লায় দলীয় নেতাকর্মী ও ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের নৈরাজ্য প্রতিহত করার আহবান জানান।
পদযাত্রা শেষে নেতাকর্মীদের চব্বিশ ঘণ্টা সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ রবিউল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ আজ পতিত ও পরিত্যক্ত নাম। আ.লীগের ইতিহাসে সকল গুম-খুন ও অবৈধ হত্যাকাণ্ডের বিচারের পর দলটি রাজনীতিতে থাকবে কিনা, জনগণ তা ভেবে দেখবে। এখন আমরা দেশ গড়ব।
কর্মসূচিতে ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ থানা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
মন্তব্য করুন