কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ওই বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভারত সরকার এই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষদের পানিতে ডুবিয়ে মারার ব্যবস্থা করেছে। এ পর্যন্ত ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভারত সরকারের এই অমানবিক কাজে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িসহ আরও কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নোয়াখালীর মাইজদীতে হাঁটুপানি জমেছে। জেলার ৯টি উপজেলার সবকটিতেই বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছে ২০ লাখ মানুষ। ফেনী জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি উপচে পড়ায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। গত ৫০ বছরে এত পানি দেখা যায়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কারো কারো ঘরে কোমর পানি। ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম ও পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে টানা ভারি বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া, জুড়ী, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে কমপক্ষে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। জমির ফসল, তরিতরকারি, ফলের বাগান পানিতে তলিয়ে গেছে। গৃহপালিত পশু-পাখি রাখার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চাল ছুঁয়েছে বন্যার পানি। এমন পরিস্থিতিতে আশ্রয় খুঁজছেন বাসিন্দারা।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িসহ আরও কয়েকটি জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে আমি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দিদের দ্রুত উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় দান এবং দুর্গত এলাকায় বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীসহ শুকনো খাবার, নগদ অর্থ, ওষুধ এবং চিকিৎসাসামগ্রী ও চিকিৎসক দল পাঠানোর জন্য আমি সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে আমি দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন