জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও ঢাকা-১৮ আসনে বিগত উপনির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই- সাংগঠনিকভাবে আমার দল ও ব্যক্তিগতভাবে আমি সকল প্রকার অন্যায় অপকর্ম, চাঁদাবাজি, দখলবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করি। দল বা আমার নাম ব্যবহার করে কেউ কোনো অপকর্ম করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আবু সাঈদ, ওয়াসিম ও মুগ্ধর মতো অনেক মেধাবী ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে আজ আমরা পেয়েছি নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ। আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ দেওয়া সকল শহীদদের ও আহত সকল সম্মুখ ভাগের যোদ্ধাদের। তাদের আত্মত্যাগেই আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ।
আমি আরও স্মরণ করতে চাই, গত দেড় যুগ ধরে চলমান স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও গুম হওয়া বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীদের; তারা জীবন দিয়ে এই আন্দোলনের পটভূমি রচনা করে গেছেন।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি আমাদের নেতাকর্মীরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে। আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই উত্তরা থেকে ডিবি পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে নির্মমভাবে অত্যাচার করে। তীব্র আন্দোলনের মুখে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গত ৬ আগস্ট আমি মুক্তি লাভ করি। স্বৈরশাসনের অত্যাচারে জর্জরিত সকল শ্রেণি পেশার মানুষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাস্তার নেমে আসার কারণে সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছে। এই আন্দোলনে মূল চাবিকাঠি ছিল বৈষম্যহীন এক পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ। এই পরিবর্তন হলো গত ১৬ বছরের জুলুম অত্যাচার, চাঁদাবাজি, জবরদখলের পরিবর্তন।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সারা দেশের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। যারা নির্দেশনা অমান্য করে অসাধু কার্যে লিপ্ত হয়েছেন, তাদেরই দলীয়ভাবে বহিষ্কার, পদ স্থগিত, কমিটি বাতিলসহ নানারকম সাংগঠনিক শাস্তি প্রদান করা হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-১৮ আসনে গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে আমি বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সেজন্য আমাকে গত উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করেছে। স্বাভাবিকভাবেই আমার সাথে হাজারো নেতাকর্মী যোগাযোগ রেখে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে।
কিন্তু আমরা গত মঙ্গলবার থেকে লক্ষ্য করছি যে, দুই তিনটি খবরের কাগজে উত্তরার চাঁদাবাজি, দখলবাজির কাল্পনিক ঘটনা উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানে আমার নাম জড়ানো হয়েছে- যা খুবই দুঃখজনক, অসত্য ও ভিত্তিহীন। আমি এই সকল বানোয়াট অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আপনাদের মাধ্যমে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপিতে কোনো চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে দলীয় নির্দেশ অমান্য করে কোনো অপকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে সেই দায় দল বা আমি নেবো না। আমি দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করবো এবং তাদের বিচারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবো। ভবিষ্যতে আমার সংক্রান্ত কোনো প্রকার সংবাদ প্রচারের পূর্বে সেটার সত্যতা যাচাই করে নেওয়ার জন্য আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ রইলো। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ প্রচার করলে তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক মর্যাদাহানী হয়।
মন্তব্য করুন