ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। কিন্তু স্বাধীনতার পর সরকারগুলো জনগণের সে আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এদের নতুন করে দেখার আর কিছু নেই।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় রাজধানীর কাওরানবাজারস্থ ওয়াসা ভবন সংলগ্ন সড়কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের ‘নগর সম্মেলন- ২৫’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, ৫ আগস্টের পর একটি দল ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠছে। বিএনপি নতুন করে আর কী দেখাবে। তারা যা করবে তা আমরা এখন তো দেখছি। ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অভ্যুত্থানের পর মানুষ আশার আলো দেখছে। নীতি ও আদর্শের নাম ইসলাম। যাদের কথা ও কাজে মিল আছে তাদের ক্ষমতায় পাঠাতে হবে।
নগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, জালেম স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দেশ ধ্বংস করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর দখল, বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদার হাত বদল হয়েছে। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দুর্নীতিতে দেশ পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে।
দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ভালো নীতি ও নেতার দ্বারা দেশ চালালে দেশ ভালো চলবে। চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হলে মানুষ ইসলামের সুফল ভোগ করবে। মানুষ ইসলামের বিজয় চায়।
যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব। সমমনা ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি, ইসলামের আলোকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করে ইসলামের সৌন্দর্য জাতির সামনে তুল ধরতে হবে। নতুন করে ফ্যাসিবাদ তৈরির সুযোগ বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বন্ধ করে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, দেশ ও জাতিকে বিভক্তের রাজনীতি আর ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। যারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছে তাদেরও আওয়ামী লীগের পথে হটানো হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে হাত পাখা প্রতীককে বিজয় করে বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের ভাত, কাপড়, বাসস্থান, চিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরাসরি জড়িত থেকে কাজ করেছে। জাতিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত করলে দেশবাসী তা রুখে দিবে।
অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, আলহাজ আনোয়ার হোসেন, মাওলানা নরুল ইসলাম নাঈম, এম হাসমত আলী, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি মো. মাছউদুর রহমান, ডা. মুজিবুর রহমান, মুফতি নিজাম উদ্দীন, শরীফুল ইসলাম আরিফ, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দীন পরশ, অ্যাড. শওকত আলী হাওলাদার, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার অব. আমিনুল হক তালুকদার, অ্যাড. মোস্তফা মামুন মনির, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদকে সভাপতি ও মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামকে সেক্রেটারি করে ২০২৫-২৬ সেশনের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন