অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে আটকের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে করা ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে অনেকে তার প্রতি সহমর্মিতাও জানাচ্ছেন। এর মধ্যে তার গ্রেপ্তার নিয়ে দলীয়ভাবে স্টেটমেন্ট দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা এটিকে লোক দেখানো বলে অবহিত করেছেন।
সোমবার (১৯ মে) রাতে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়। বিবৃতিতে এ ধরনের ঢালাওভাবে আসামি করা মামলায় গ্রেপ্তার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের ঘটনা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে বলেও জানায় দলটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভাটারা থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গতকাল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরবর্তীতে আজ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি মনে করে এ ধরনের ঘটনা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করছে। অথচ আমরা দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ চলতি মাসেই কোনো রকম বাধাবিপত্তি ছাড়াই দেশত্যাগ করেছেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রিত ৬২৬ ব্যক্তির পরিচয় এখনো প্রকাশিত হয়নি।
উপরন্তু, জুলাই গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পতিত ফ্যাসিবাদী ও এর সমর্থকরা এখনো জনপরিসরে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ দেশের নাগরিকবিরোধী অপতৎপরতা জারি রেখেছে। ফলে জুলাই গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে এ ধরনের লোক দেখানো ও ঢালাওভাবে আসামি করা মামলায় গ্রেপ্তার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের ঘটনা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে।
এনসিপি জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা মনে করি, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রশাসনের মধ্যে থাকা একটি পক্ষ এই ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ‘জুলাই গণহত্যা’ এবং এর বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। অথচ এখন পর্যন্ত এই গণহত্যার বিচারে আমরা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত এর বাস্তবায়নকল্পে আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন দেখতে পাইনি। আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায় এনসিপি।
সে লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আশু ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাই আমরা। এছাড়াও, হরেদরে মামলা এবং মামলা বাণিজ্যের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানায় এনসিপি।
মন্তব্য করুন