শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জটিলতা সৃষ্টি করে মান-অভিমান, এটা গ্রহণযোগ্য কাজ না : আনু মুহাম্মদ

আলোচনা সভায় ড. হারুন উর রশীদ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও মোশাহিদা সুলতানা। ছবি : সংগৃহীত
আলোচনা সভায় ড. হারুন উর রশীদ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও মোশাহিদা সুলতানা। ছবি : সংগৃহীত

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াতে নীতিমালা প্রণয়নে দৃষ্টিপাত না করে সরকার অন্যদিকে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে তারপর মান-অভিমান করছে। এটা কোনো গ্রহণযোগ্য কাজ না।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ : কেমন বাজেট চাই?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, এ সরকারের স্থায়ী কোনো ‘ম্যান্ডেট’ নেই। এ সরকার দীর্ঘদিন থাকবে না। তাই তার পক্ষে অনেক কিছুই সম্ভব না। তবে সরকার বৈষম্যহীন বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু কিছু পরিবর্তনের গতিমুখ তৈরি করতে পারে।

অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, সম্পদের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ তৈরি হবে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার পর। সরকারের এটা প্রতিশ্রুতির অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকারের দিকে না গিয়ে বিদেশি কোম্পানি, বিদেশি বিনিয়োগ, স্টারলিংক, এলএনজি আমদানি- এসব দিকে মনোযোগ দেওয়া তো এ সরকারের দায়িত্ব না।

তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশে অগ্রসর হওয়ার জন্য জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো, শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা, কৃষি-শিল্পের ক্ষেত্রে পরিবর্তন করা এবং জনগণের জন্য পরিবেশবান্ধব যে পথ, সে পথটাই যাতে শক্তিশালী হয়। তার জন্য প্রয়োজনীয় মতাদর্শিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করা। সরকার সে কাজটা করবে। সে কাজের দিকে না গিয়ে অন্যদিকে গিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে, তারপর মান-অভিমান করা, এটা তো কোনো গ্রহণযোগ্য পথ না।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা না করে, ধরেন চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা এমনভাবে ঘোষণা করলেন এটা দিতেই হবে, যে কোনো মূল্যে দিতে হবে। হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের নতুন নাম দিয়েছে ত্রাণ চ্যানেল। দুটির ঘটনা তো একই। এগুলো করতে হবে। কিংবা স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। সবগুলোই কোনো না কোনোভাবে জাতীয় সক্ষমতার বিকল্প হিসেবে হাজির করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যেসব দুর্বলতা আছে, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব আছে- সেগুলো দূর করার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় তৎপরতা বাড়াতে পারত। প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার জন্য পাঠাতে পারত। চট্টগ্রাম বন্দরে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো হলে সেটার স্থায়ী ও স্থিতিশীল প্রভাব ভবিষ্যতের জন্য থাকত।

বাজেটে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, বিডার চেয়ারম্যান হঠাৎ করে এলএনজি আমদানির জন্য চুক্তি করে এলেন। পেট্রোবাংলা জানে না। এটা তো হওয়ার কথা না। দেশের দরকার ছিল গ্যাস উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানো। সেটার জন্য গত নয় মাসে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সামনের বাজেটে এই জিনিসগুলো থাকতে হবে। জাতীয় সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিগত অবস্থানের একটা পরিবর্তন করতে হবে। সেটা হলে সস্তায় গ্যাস, বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আমদানির জন্য এত ব্যয়, ভর্তুকি দিতে হবে না।

সৈয়দপুর, পার্বতীপুর ও চট্টগ্রামে রেলওয়ের যেসব ওয়ার্কশপ ছিল, সেগুলোর জনবল কমানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ওয়ার্কশপের সক্ষমতা কমিয়ে রেলের ইঞ্জিন, বগি, ওয়াগন- সবকিছু আমদানি করা হয়েছে। অথচ ওয়ার্কশপ শক্তিশালী করা হলে বাংলাদেশে বগি, ইঞ্জিন- সবই নির্মাণ করা সম্ভব হতো।

অর্থবছর (জুলাই-জুন) পরিবর্তন করার পক্ষে মত দেন আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, বাংলা বছর অথবা জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর অর্থবছর করা প্রয়োজন। কারণ, বর্তমান অর্থবছরের শেষ দিকে বৃষ্টি থাকে, উন্নয়নকাজে অর্থের অপচয় হয়, কাজ ঠিকমতো হয় না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কৃষকের সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক দ্বার খুলতে পারে বায়োচার

জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখার আহ্বান ছাত্রশিবিরের

বিএনপিকে ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

যাত্রাবাড়ী পার্কে ককটেল বিস্ফোরণ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক শনিবার

আড়াইহাজারে শহীদ নাহিদের পরিবারের পাশে নজরুল ইসলাম আজাদ

নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে আদিবাসী গোষ্ঠীর মামলা

পিনাকী, ইলিয়াস ও কনকের ঐক্যবদ্ধ আহ্বান

সকাল ৯টার মধ্যে ১০ জেলায় ঝড়ের আশঙ্কা

খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, আ.লীগ নেতার মৃত্যু

১০

কাপ্তাই হ্রদে পানির অভাব, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপর্যয়

১১

ছাগলের দৌড় দেখতে হাজারো মানুষের ভিড় 

১২

দুদকের সাবেক ৩ চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

১৩

সৌদিতে ফ্ল্যাটে মিলল দুই ভাইয়ের মরদেহ, পরিবারে শোকের ছায়া

১৪

পাল্টাপাল্টি আকাশপথ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াল ভারত-পাকিস্তান

১৫

জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতার পদত্যাগ

১৬

সাবেক ওসি প্রদীপের ফাঁসি কার্যকর দাবিতে প্রচার, যা জানা গেছে

১৭

দেশ নিয়ে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের প্রেসক্রিপশনে পরিকল্পনা চলছে : জুলাই ঐক্য

১৮

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে অনশন, হাসপাতালে দুই

১৯

সান্ডা থেকে গাধা : মানুষের তামাশায় প্রাণীরাও আজ নিরাপদ নয়!

২০
X