চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে অবিলম্বে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
জোটের নেতারা বলেছেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জাতির মধ্যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। তারা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতি নির্বাচন চায়। বিএনপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ দেশের গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল এবং জোটও এই সময়ে নির্বাচন চায়। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা চলবে না। কোনো অজুহাতেই নির্বাচনকে প্রলম্বিত করা যাবে না।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের শীর্ষ নেতারা এ সব কথা বলেন।
জাপান সফরে এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ডিসেম্বরে মাত্র একটি দল নির্বাচন চায়।’ প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে সমমনা জোটের নেতারা বলেন, কেবল একটি দল নয়, দেশের গণতন্ত্রকামী সব দলই চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। তারা গত ৯ মাস ধরে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের কথা স্পষ্টভাবে বলে এসেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে এখনো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তারা সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন। কিন্তু সংস্কারের নামে নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে বলব, এ লক্ষ্যে অবিলম্বে নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
সরকার ৯ মাসে কী সংস্কার করেছে, জাতি তা জানতে চায় এমন মন্তব্য করে তারা বলেন, বিএনপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ গণতন্ত্রগামী সব দলই সংস্কারের পক্ষে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা দিয়েছেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত করতে এর বিকল্প নেই। এই ৩১ দফার মধ্যেই রয়েছে রাষ্ট্র মেরামতের যাবতীয় উপাদান। ৩১ দফা শুধু বিএনপির নয়, এটা বিগত স্বৈরাচার আমলে রাজপথে থাকা সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তাছাড়া এই সরকারের পক্ষে সব সংস্কার করা সম্ভব নয়। কারণ এই সরকার একটি স্বল্প মেয়াদকালীন সরকার, অনির্বাচিত সরকার। এই সরকারের মূল কাজ হচ্ছে, নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষে দ্রুততম সময়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু সরকার সেই পথে না হেঁটে ক্ষমতায় থাকার রাস্তা পাকাপোক্ত করার চেষ্টায় ব্যস্ত।
জোট নেতারা আরও বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে এত লড়াই-সংগ্রাম, বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এত মামলা-হামলা, গুম-খুন, সব কিন্তু নির্বাচনের জন্যই। আমরা তাই স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার কোনো ষড়যন্ত্র দেশের জনগণ মেনে নেবে না। জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিম খান, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাত হোসেন এবং পিপলস লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ।
মন্তব্য করুন