মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালের ২৬ জুলাই। শনিবার (২৬ জুলাই) দলটির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। তবে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে হতাহতদের সম্মানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সব আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করেছে ন্যাপ।
দলটির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, দেশের সব সংকট উত্তরণে প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য।
তারা উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে হতাহতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ন্যাপ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটাসহ সব আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করে সব জেলা কমিটিকে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করার আহ্বান জানান।
নেতারা বলেন, ৬৮ বছর পূর্বে জাতির এক চরম ক্রান্তিকালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বিশ্বনন্দিত নেতা, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও গণমানুষের মুক্তির লক্ষ্যে ন্যাপ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ন্যাপ এ অঞ্চলের মানুষের মুক্তি, স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য সংগ্রাম করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
তারা বলেন, দলের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মহান দিনে দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে দলকে আরো গতিশীল করার ক্ষেত্রে মনেপ্রাণে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।
নেতারা দলের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানী, পরবর্তী চেয়ারম্যান মশিউর রহমান যাদু মিয়া, পরবর্তী চেয়ারম্যান শফিকুল গানি স্বপনসহ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত যারা ইন্তেকাল করেছেন, তাদের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে গণশক্তি গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
১৯৫৭ সালের ৬-১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের কাগমারিতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে ওই বছরের ১৮ মার্চ মওলানা ভাসানী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে ২৪-২৫ জুলাই গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) গঠিত হয়।
মওলানা ভাসানীর পরে এই দলের নেতৃত্ব দেন জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়া। সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গনি স্বপন ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ পুনর্গঠন করেন এবং দলটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন লাভ করে। বর্তমানে জেবেল রহমান গানি এবং এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে অবদান রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ন্যাপ।
মন্তব্য করুন