গুম ও খুন করে বর্তমান সরকার কিছু সময়ের জন্য আয়ু বাড়াতে পারে, তবে তাদের বিদায় নিতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত '১/১১ ষড়যন্ত্র, আজকের প্রেক্ষাপট: দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আমির খসরু বলেন, জীবনের বিনিময়ে আমরা আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনব। বিশ্ব বিবেক, বিশ্ব গণতন্ত্র আমাদের পক্ষে আছে, জনগণের পক্ষে আছে। আমাদের জয় সুনিশ্চিত। তবে এ জন্য আগামী দিনগুলোতে আমাদের শপথ নিতে হবে। প্রত্যেকটি ঘণ্টা, প্রত্যেকটি দিন আন্দোলনের সঙ্গে সবাইকে থাকতে হবে। এই দুটা মাস দেশের মানুষের জন্য স্যাক্রিফাইস করতে হবে।
তিনি বলেন, ১/১১ এর মাধ্যমে যেটা হয়েছে সেটা হলো দেশের গণতান্ত্রিক যে কাঠামো; সেখানে তারা আঘাত করেছে। রাজনীতিতে এই লোকগুলোর আসার কোনো অধিকার নেই। রাজনীতিতে আসতে হবে নির্বাচিত হয়ে। একটা নিরপেক্ষ সরকারের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দরকার। যা একটি সুন্দর সরকার দেবে সেটাই সংবিধান। অথচ তারা ভোট চুরির অংশ হিসেবে বলছে সংবিধানের কথা। তারা মানুষের অধিকারের কথা বলছে না, তারা একটা ভোট চুরির প্রকল্পের কথা বলছে। এই প্রকল্পের মধ্যে বিচারক আছে, সরকারি কর্মকর্তারা আছে, ব্যবসায়ীরা আছে, লুটেরা আছে, রাজনীতিবিদ আছে, সুবিধাভোগীরা আছে। তারা ভুলে যাচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে শুধু জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনই দেখা গেছে। যতবার নিরপেক্ষ সরকারের আওতায় নির্বাচন হয়েছে ততবার জনগণের প্রতিফলন সুন্দর করে উঠে এসেছে। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনগুলো সব সময় প্রশ্নবিদ্ধ। এ জন্য জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে যে নির্বাচনটা হয়েছে, সংবিধানে আছে সংসদ বাতিলের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। তো সেই নির্বাচন হয়েছে দুই বছর পর। তাহলে এটা কি সংবিধানসম্মত হয়েছে? এটা সংবিধানের বাইরে না? আমরা সেই নির্বাচনে গিয়েছিলাম তাই জনগণের প্রত্যাশায় প্রতিফলন ঘটেছিল। কিন্তু এখন সে প্রতিফলনকে আবার একটি ভোট চুরির প্রকল্প বানিয়ে ফেলা হচ্ছে। জাতীয় গণতান্ত্রিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে নির্বাচন হবে সেটা আওয়ামী লীগ এককভাবে বাতিল করেছে। সংবিধানের ৭ ধারাতে বলা হচ্ছে সংবিধান হলো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন। সেইটার সাথে তারা বেইমানি করছে। ভাওতাবাজি করছে সংবিধানের নাম ধরে। সংবিধানে যে কেয়ারটেকার সরকারের কথা ছিল, সেটা জাতীয় ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে। যে সংবিধানে জাতীয় ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি, জাতীয় ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটেনি, সেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে এগুলো তারা করতে পারে না। কেয়ারটেকার সরকারের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, জিয়া পরিষদের উপদেষ্টা রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান, বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন