যুগপৎ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিএনপির মহাসমাবেশ ও এবি পার্টি আহুত গণতন্ত্র সমাবেশ চলাকালে পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলা, গুলিবর্ষণ ও মুহুর্মুহু টিয়ারশেল নিক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দমন পীড়ন ও হটকারিতার পথ ছেড়ে কালবিলম্ব না করে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। একইসঙ্গে বিএনপি জোটের ডাকা আগামীকালের হরতালের প্রতিও পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে দলটি।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু অভিযোগ করে বলেন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এবি পার্টি আয়োজিত গণতন্ত্র সমাবেশ চলাকালে বেলা সোয়া ২টার দিকে অতর্কিতে পুলিশ পল্টন মোড় থেকে একের পর এক সাউন্ড গ্রেনেড চার্জ করতে থাকে। তারা বিএনপি কর্মীদের উপরও নির্বিচারে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এসময় বিএনপি কর্মীদের পাশাপাশি এবি পার্টির নেতাকর্মীরাও অনেকে আহত ও রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বিকেলের দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা লাঠি সোটা নিয়ে বিজয়নগরের এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও হামলা করেছে।
এরআগে আজ সকাল ১১ টায় রাজধানীর বিজয়-৭১ চত্বরে এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে গণতন্ত্র সমাবেশ শুরু হয়। দলের সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, এবি যুবপার্টির আহবায়ক এবিএম খালিদ হাসান, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ, মহানগর উত্তরের আহবায়ক আলতাফ হোসাইন ও সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত মারজান।
সোলায়মান চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র সমাবেশ চলা অবস্থায় সরকার মুহুর্মুহু সাউন্ড গেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে চরম অরাজকতার সূচনা করেছে। তিনি অবৈধ সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, জনতার এই বিপ্লব বিজয়ের মাধ্যমে শেষ হবে ইনশাআল্লাহ।
আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, বাকশালি সরকার জনগণের উপর হামলা করে দেশজুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে দিতে চায়। তিনি অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, জনগণের সমাবেশে যেভাবে সরকার হামলে পড়েছে তাতে এই সরকার আর চলতে পারেনা। ফ্যাসিবাদ হটিয়ে জনগণের সরকার কায়েম করেই আমরা ঘরে ফিরবো ইনশাআল্লাহ। পুলিশ দিয়ে, হামলা করে, মামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবেনা।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বর্তমান সরকার অতীত স্বৈরশাসনের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এরা অবৈধ, এরা চোর, এরা লুটেরা, এরা দুর্নীতিবাজ, এরা মানবাধিকার হরণকারী, এরা ধর্ষক, এরা আলেম ওলামাদের প্রতি জুলুমকারী, এরা হিন্দুদের সম্পত্তি দখলকারী, এরা প্রশাসন, পুলিশ, আইন-আদালত ধ্বংসকারী, সর্বোপরি এরা দেশের সংবিধান এবং সকল ধরনের নীতি আদর্শ ধ্বংসকারী। জনগণ আজ এই সরকারের প্রতি চুড়ান্ত অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। তিনি দমন পীড়ন ও হটকারিতার পথ ছেড়ে কালবিলম্ব না করে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান জানান।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে একটা ভূখণ্ড পেয়েছে মাত্র। কিন্তু দীর্ঘদিনের ইংরেজ ও পাকিস্তানী শোষনের পর দেশীয় শাসকবর্গ সেই একই প্রক্রিয়ায় জুলুম নির্যাতন করে মানুষকে তাদের অধিকার হারা করে রেখেছে। না আছে থাকা খাওয়ার নিশ্চয়তা না আছে শিক্ষা চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা।
যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া বলেন, ২৮শে অক্টোবর ফ্যাসিবাদের জন্মদিন। লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে শুরু হওয়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দিনে দিনে আজ পূর্ণতা পেয়ে বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরেছে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে জনগণকে সাথে নিয়ে এখনই এই অক্টোপাসের থাবা কেটে দিতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট সাঈদ নোমান, যুবপার্টির সদস্য সচিব শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, গাজীপুর জেলা আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসাইন, সদস্য সচিব এম আমজাদ খান, মেহেদী হাসান চৌধুরী পলাশ, এস এম আক্তারুজ্জামান, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক আশরাফ মাহমুদ রুমেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক গাজী নাসির, আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব ফিরোজ কবির, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব সফিউল বাসার, যুবনেতা হাদিউজ্জামান খোকন, তোফাজ্জল হোসেন রমিজ, আলী নাসের খান, নারী নেত্রী রাজিয়া সুলতানা, আমেনা বেগম, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, শীলা আক্তার, সহকারী প্রচার সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন শরিফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবার রহমান, এনামুল হক, সেলিম খান, আব্দুর রব জামিল, যুবনেতা মাসুদ জমাদ্দার রানা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন