বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত বৃহস্পতিবার ‘বিআরআইর ১০ বছর : পরবর্তী সোনালি দশকের সূচনা’ শীর্ষক সেমিনারে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা বাংলাদেশের জনগণের মতের প্রতিফলন নয়। এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা জনগণের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ শনিবার একথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীনা রাষ্ট্রদূত ওয়েন নির্বাচনের প্রেক্ষিতে ‘বাংলাদেশের সংবিধান মেনে চলার’ ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বাংলাদেশকে নিয়ে তার এই উদ্বেগকে আমরা স্বাগত জানাই। পাশাপাশি এটিও মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনকারী দল হিসেবে বিএনপি সবসময় সেই সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, যা জনগণ দ্বারা অনুমোদিত ও গৃহীত। এখানে উল্লেখ্য, জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত, সর্বজনস্বীকৃত ও বহুল প্রশংসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে সরকার বাতিল করেছে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে পরপর দুটি প্রহসনমূলক জাতীয় নির্বাচন স্পষ্টতই প্রমাণ করেছে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ, নির্বাচনের নামে যে রাষ্ট্রীয় দুর্বৃত্তায়ন, তাতে অনেক ক্ষেত্রে সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি চিহ্নিত অংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বস্তুত, চীন বাংলাদেশের ‘সংবিধান অনুযায়ী’ আসন্ন নির্বাচন দেখতে চায় বলে রাষ্ট্রদূত ওয়েন যে মন্তব্য করেছেন, তা জনগণের ইচ্ছা বা আকাঙ্খার প্রতিফলন নয়। জনগণের একটি সুবিশাল অংশ গত দশ বছরে ভোট প্রদানের কোনো সুযোগ পাননি। আর তাই, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন ও কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার অধীনে নয়, বরং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চাচ্ছেন। রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন সমগ্র জাতি গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে, নিজেদের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে, আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাচ্ছে।
বিএনপির ববিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ব্যবসা, বাণিজ্য, জ্ঞান ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের ভিত্তিতে। বিএনপি বিশ্বাস করে, দুই দেশের জনগণের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনেই কূটনৈতিক সাফল্য নিহিত। তাই বিএনপি চীনকে আহ্বান করছে, বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদির প্রতি আলোকপাত করবার জন্য। দেশের মানুষের চলমান সংগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সর্বাত্মক সমর্থন প্রত্যাশা করে, যেন অচিরেই বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
মন্তব্য করুন