বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দুটি এবং যুগপতের বাইরের একটি দলকে নিয়ে ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে তাদের ‘রাজনৈতিক ভুল’ বলে মনে করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি মনে করেন, জনগণ এটাকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে।
কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন এবং নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।
তিনি যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য বিএনপির গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যও।
নতুন এই জোট গঠনে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের কোনো ক্ষতি হবে না বলে মনে করেন নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট গঠন করে সরকার একদফার ভিত্তিতে গড়ে উঠা চলমান আন্দোলনের ক্ষতি করার চিন্তা করছে। তাও ব্যর্থ হবে।
তিনি আরও বলেন, এদের সম্পর্কে কী বলব। তাদের কথা ও কাজে তো কোনো মিল দেখি না। আজ এক কথা বলে তো, কাল আরেক কথা। এর ফলে তারা ইতিহাসে আপসকামী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তারা এটা লোভে পড়ে করেছে- এটা এখন স্পষ্ট। তারা পক্ষ পাল্টে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণায় কেবল তাদেরই যে ক্ষতি হলো, তা নয়- এতে রাজনীতিরও ক্ষতি হয়েছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, এসব কারণে তাদের নিয়ে জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা জন্ম নিতে পারে। তারা যে ভুল করেছে, ভবিষ্যতে তা তারা বুঝতে পারবে।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীরপ্রতীক) ও আব্দুল আউয়াল মামুনের নেতৃত্বাধীন কল্যাণ পার্টির প্রতীক হাঁতঘড়ি, অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রতীক হাত (পাঞ্জা) এবং অধ্যাপক ডা. এম এ মুকিত ও জাফর আহম্মাদ জয়ের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক ‘কাঁঠাল’।
গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে দশ দফার ভিত্তিতে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। এরপর গত ১২ জুলাই থেকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে আন্দোলনে নামে দলটি। ৪২টির মতো দল এই যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপিসহ ৮টি নিবন্ধিত দল রয়েছে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করেই ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে যুগপতের শরিকদের। তবে বেশ কিছুদিন ধরে যুগপতের নিবন্ধিত একাধিক দল বিএনপিকে ছেড়ে নির্বাচনে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর গুঞ্জন শুরু হয়। এমন প্রেক্ষাপটে সরকারি চাপ এবং এমপিত্বের প্রলোভনে পা না দিতে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় যুগপৎ শরিকদের অনুরোধ জানানো হয়।
মন্তব্য করুন