কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৫ পিএম
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সিটি-পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে যে সিদ্ধান্ত জানালেন কাদের

ওবায়দুল কাদের।পুরোনো ছবি
ওবায়দুল কাদের।পুরোনো ছবি

নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে ও কোন্দল রোধে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনেও দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন বা নৌকা প্রতীক দেবে না আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ উন্মুক্ত থাকায় দলটির তৃণমূলে যে কোন্দল ও বিভেদ তৈরি হয়েছে তা নিরসন করতে সাংগঠনিক উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এসব নির্দেশনা দেন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠনের পর এটাই ছিল আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের প্রথম বৈঠক।

বৈঠক সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না দেওয়ার জন্য দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন প্রস্তাব তুলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি সকলের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, সবাই যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার পক্ষে সেহেতু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়া হবে না। এমনকি সিটি ও পৌরসভা নির্বাচনেও প্রার্থী দেওয়া হবে না। পরবর্তীতে দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

স্থানীয় সরকারের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট করার বিধান থাকলেও দলটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দলে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে তা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা ও নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বৈঠক শেষে গণভবনের প্রধান ফটকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আমরা দলের প্রতীকের প্রার্থিতা দেব কি না- তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওয়ার্কিং কমিটি প্রায় সর্বসম্মত যে, এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমাদের দলীয় প্রতীক নৌকা ব্যবহার করা হবে না। এ ছাড়া সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনেও দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন নৌকা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এখন অভিমত পেশ করেছে। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার অভিমতের সঙ্গে তিনি ভিন্নমত প্রকাশ করেন না।

তিনি বলেন, যেহেতু সবাই এখানে একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। আপাতত এটা ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত। ওয়ার্কিং কমিটি যেটা সিদ্ধান্ত নেয়, মনোনয়ন বোর্ড সেই সিদ্ধান্ত বহাল করে। এটা মনোনয়ন বোর্ডের আনুষ্ঠানিকতা। সেই আনুষ্ঠানিকতার আগে বিষয়টি নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রার্থী সব মিলিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে মনোমালিন্য... কিছু কিছু জায়গায় তার রেশ এখনো রয়ে গেছে। তা দূর করতে আমাদের দলের যে আটটি বিভাগীয় কমিটি রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের বলে ঢাকায় ডেকে এনে তা সমাধানের কথা বলা হয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, দলের জ্যেষ্ঠ নেতার উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না করার পরিপ্রেক্ষিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আপাতত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এতে ভোট উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক হবে। যিনি জনপ্রিয় প্রার্থী তিনিই জয়ী হয়ে আসবেন। বিষয়টি নিয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।

দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মতামত ব্যক্ত করেন। এ সময় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা পশ্চিমা দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে বলেন, ভোটার উপস্থিতির বিষয় নিয়েই তো ‘মাতবররা’ সবক দেন। উন্মুক্ত নির্বাচন হলে ভোটার বাড়বে।

জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি দলের নেতা–সমর্থকদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেয়। বিএনপি পরবর্তীতে ভোটে এলে তখন পরিস্থিতি বুঝে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে প্রতীক দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ভোট-পরবর্তী সংঘাতের বিষয়টি আলোচনায় আসে। কেউ কেউ একটি বর্ধিত সভা করে বিভেদ কমানোর প্রস্তাব দেন। তবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা একে অপরের মধ্যে বিরোধের মধ্যে বর্ধিত সভা না করার কথা বলেন। বরং দলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বিভেদ কমাতে তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন। বিবদমান জেলা-উপজেলা শাখার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধান করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া পরবর্তীতে বর্ধিত সভা করার কথা বলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘বিএআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ এর জন্য প্রতিবেদন আহ্বান

কুড়িয়ে পাওয়া পাথর থেকে ঘড়ি, বিক্রি হলো ৫ হাজার টাকায়

শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছে আর্সেনাল

আরব আমিরাতের স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পেল সাড়ে ৬ হাজার বন্দি

ঢাকা কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

আইসিসি থেকে বড় সুখবর পেলেন ৩ টাইগার ক্রিকেটার

বিচ্ছেদের পথে অঙ্কিতা-প্রান্তিক 

সশরীরেই ট্রাইব্যুনালে আসতে হবে সেনা কর্মকর্তাদের

স্ত্রীকে নিয়ে যা বললেন বিক্রান্ত ম্যাসি

দেশে এসে ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে প্রবাসীদের

১০

মেক্সিকোর পার্লামেন্টে খালেদা জিয়াকে স্মরণ

১১

বাসে আগুন

১২

ট্যাক্স ছাড়া প্রবাসীরা কয়টি মোবাইল আনতে পারবেন, জানাল সরকার

১৩

অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও শপথ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ বৃহস্পতিবার

১৪

কৃষকের মারধরে ‘দাঁত’ ভাঙল কৃষি কর্মকর্তার

১৫

রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল ইউরোপ

১৬

অবৈধ হ্যান্ডসেটের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিল সরকার

১৭

ইয়েমেন ও বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্য-সৌদির যৌথ মানবিক প্রকল্প

১৮

গুমের দুই মামলায় হাসিনার পক্ষের আইনজীবী আমীর হোসেন

১৯

এভারকেয়ারের পাশে খোলা মাঠে হেলিকপ্টার পরীক্ষামূলক ওঠানামা করবে

২০
X