কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মে ২০২৪, ০৩:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পরিবর্তন আনতে ছাত্রসমাজকে রাজপথে নামতে হবে : গয়েশ্বর

রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি : কালবেলা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করে দেশে গণতান্ত্রিক ধারায় পরিবর্তন আনতে অতীতের মতো ছাত্রসমাজকে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শুক্রবার (৩১ মে) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ‘৫২'র ভাষা আন্দোলন, '৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, ‘৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ আহ্বান জানান।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া, আমানউল্লাহ আমান,জাহাঙ্গীর আলম, শরিফ প্রধান শুভ, গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ।

শিশুরা সুন্দর মাতৃক্রোড়ে, ছাত্ররা সুন্দর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনটা উল্লেখ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, বাবা-মা তার সন্তানকে লেখাপড়ার জন্য পাঠিয়েছেন। ফলে একজন ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যাবে, আবাসিক হলে থাকবে, লেখাপড়া-খেলাধুলা করবে, সকল অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করবে, প্রতিরোধ গড়বে। কিন্তু সেই ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দেওয়া হয় না, গেলে তাদের রক্তাক্ত হতে হয়। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন আমলে অর্থাৎ গত ১৫-১৬ বছরে অনেক সম্ভাবনায় জীবন শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় হাজিরা দিতে যেতে হয়। আগ্রাসী শক্তি ছাত্র-যুবকের কন্ঠরোধ করছে। ১৭ বছরে অনেক মেধাবী ছাত্রের জীবন ধ্বংস করা হয়েছে। যুবকরা নিজ নিজ স্থান থেকে বিতাড়িত হয়ে রাজপথে ঘুরছে। আজকে ছাত্রদের যুদ্ধ করে প্রতিষ্ঠানে টিকে থাকতে হচ্ছে। এটি একটি অভিশপ্ত জীবন। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পতন না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে শেষ পর্যন্ত রাজপথে থাকার আহ্বান জানান গয়েশ্বর।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্ররাই কেবল পরিবর্তন আনতে পারে। ছাত্র বলতে শুধুমাত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নয়; সকল ছাত্রসমাজ। এদেশে যত পরিবর্তন হয়েছে, তার মূলে ছিল ছাত্ররা। সকল অন্যায় অত্যাচারের পরিবর্তন করেছে ছাত্ররা। ‘৫২ থেকে ‘৯০ পর্যন্ত সকল পরিবর্তনের মূলে ছিল ছাত্ররা। এই ছাত্ররা যেদিন ক্যাম্পাস থেকে রাজপথে বেরিয়ে এসেছে, সেদিন আর কোনো সরকার টিকে নাই।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ ইত্যাদি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতির নামে তারা যা করছে, তা ছাত্র সমাজ তথা জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায়। আমি আশা করব, ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে বর্তমান ফ্যাসিবাদের পতন ঘটবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর রায় বলেন, বিএনপিকে শেষ করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়। কিন্তু যারা ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপি শেষ হয়ে যাবে, তাদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে নেমে এসেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তার নেতৃত্বে দেশে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর রায় বলেন, সম্প্রতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করবেন। যেদিন তিনি আসবেন সেদিন জনতার ঢেউয়ে আপনারা কোথায় ভেসে যাবেন তা চিন্তা করুন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন-যুদ্ধের সময় খালেদা জিয়া কোথায় ছিলেন? যাদের কোনো অবদান নেই তারাই এগুলো বলতে পারেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে বহুদলীয় গণতন্ত্র সবই তো জিয়া পরিবারের অবদান। জিয়াউর রহমানের সম্মুখ যোদ্ধার অপরাধে দুই শিশু সন্তানসহ বন্দি রাখা হয় খালেদা জিয়াকে।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আজকে বিদেশি রেমিট্যান্স ও গার্মেন্টের ওপর ভর করে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। এসব জিয়াউর রহমানের অবদান। জিয়া শুধু বীরউত্তম নন, উত্তমের উত্তম। জিয়াউর রহমানের সততা নিয়ে কারো কথা বলার সুযোগ নেই।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ছাত্রদলকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে কোথাও কর্মসূচি করতে হল ভাড়া দেওয়া হয় না। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। বারবার সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছি। তবু আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়িনি। আজকে প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে।

এতে আরও অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদুজ্জামান আসলাম, সুজন মোল্লা, মহানগর ছাত্রদলের শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি, আল আমিন, পাভেল সিকদার, নিয়াজ মাহমুদ নিলয়, মেহেদী হাসান রুয়েল, রাসেল বাবু, নাসির আনান, জুয়েল হাসান রাজ, ঢাকা কলেজের শাহীনুর রহমান (শাহীন), জুলহাস মিয়া (মৃধা জুলহাস), সরকারী তিতুমীর কলেজের আরিফুর রহমান এমদাদ, ইমাম হোসেন, তেজগাঁও কলেজের ফয়সাল দেওয়ান বেলাল হোসেন খান, কবি নজরুল সরকারী কলেজের সাইদুর রহমান সাইদ, কাওসার হোসেন, সরকারী বাঙলা কলেজের হোসেন বিপ্লব, বেল্লাল হোসেন সোহাগ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু হোরায়রা, রাজিবুল ইসলাম তালুকদার (বিন্দু), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আহমেদুল কবীর তাপস, বি.এম. আলমগীর কবীর প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাব ব্রাঞ্চ ইনচার্জ পদে ইউসিবি ব্যাংকে চাকরির সুযোগ

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

এসএমসিতে চাকরির সুযোগ, আজই আবেদন করুন

সিদ্ধিরগঞ্জে বিস্ফোরণে নাতির পর নানির মৃত্যু

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সম্মেলন আজ

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

২৬ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

ডাকসু নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু আজ

তিন সহযোগীসহ ‘মাদক সম্রাট’ শাওন গ্রেপ্তার

ফের সৈকতে ভেসে এলো মৃত ইরাবতী ডলফিন

১০

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১১

২৬ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১২

পাঁচ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

১৩

ক্ষমতায় গেলে এক কোটি কর্মসংস্থান করবে বিএনপি : টুকু

১৪

ড. ইউনুস কি ভালো ভোট করতে পারবেন : মান্না

১৫

ষড়যন্ত্রকারীদের সতর্কবার্তা দিলেন আমিনুল হক

১৬

স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর মৃত্যু, চাচাতো চাচা রফিকুল রিমান্ডে 

১৭

জবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা মনিটরিং সিস্টেম চালু ১ সেপ্টেম্বর

১৮

স্থপতি মোশতাক আহমেদের বাবার মৃত্যুতে রাজউক চেয়ারম্যানের শোক

১৯

আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি, উকিল খুঁজছেন স্বপন

২০
X