শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ধর্ষণকারীকে যে শাস্তি দিতে বলেছে ইসলাম

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

ইসলামে ব্যাভিচারী এবং ধর্ষণকারীকে জনসম্মুখে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আর এর শাস্তি হলো ১০০ বেত্রাঘাত অথবা পাথর মেরে হত্যা করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তাদের শাস্তি দিতে যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয় এবং মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’

কোরআন বা হাদিসে ধর্ষণকে ভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। বরং বিবাহবহির্ভূত যে কোনো যৌন সম্পর্কই ইসলামে অপরাধ হিসেবে গণ্য। ফলে ব্যাভিচারী ও ধর্ষক উভয়ের জন্যই কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করেছে ইসলাম।

ইসলামী আইনশাস্ত্র মোতাবেক ধর্ষকের শাস্তি ব্যাভিচারকারীর শাস্তির অনুরূপ। তবে অনেক ইসলামী স্কলার ধর্ষণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিছু শাস্তির কথা উল্লেখ করেছেন। ধর্ষণের শাস্তির ব্যাপারে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। শাস্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিষয়টির স্পর্শকাতরতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এক হাদিসে আছে, রাসুল (সা.)-এর যুগে এক নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হলে হজরত (সা.) ওই নারীকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি, তবে ধর্ষককে হত্যার শাস্তি দেন। অর্থাৎ ব্যাভিচারকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না হলেও ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

শিরক ও হত্যার পর ব্যাভিচার বা ধর্ষণ সুস্পষ্ট হারাম ও বড় ধরনের অপরাধ। এজন্য ইসলামে ব্যাভিচার ও ধর্ষণের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তবে এখানে শাস্তি ব্যক্তিভেদে একটু ভিন্ন। নিজের স্বামী/স্ত্রী থাকাবস্থায় যদি কেউ ব্যাভিচারী হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ইসলামের বিধান। আর যদি ব্যাভিচারী (নারী-পুরুষ) অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশটি বেত্রাঘাত করা হবে।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ব্যাভিচারিণী নারী, ব্যাভিচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ২)

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘অবিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে শাস্তি একশ বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ-নারীর ক্ষেত্রে একশ বেত্রাঘাত ও রজম (পাথর মেরে মৃত্যুদণ্ড)। ’ (সহিহ মুসলিম)

ইসলামে ধর্ষণের শাস্তির স্বরূপ

ধর্ষণের ক্ষেত্রে একপক্ষে ব্যাভিচার সংগঠিত হয়। আর অন্যপক্ষ হয় নির্যাতিত। তাই নির্যাতিতের কোনো শাস্তি নেই। কেবল অত্যাচারী ধর্ষকের শাস্তি হবে। ধর্ষণকারী একসঙ্গে দুটো অপরাধ সংঘঠিত করে। এক. ব্যাভিচার। দুই. অন্যের শারীরিক এবং সামাজিক মর্যাদার ক্ষতি। এক্ষেত্রে প্রথমটির জন্য পূর্বোক্ত ব্যভিচারের শাস্তি বরাদ্দ। আর যেহেতু একই সঙ্গে দ্বিতীয় আরেকটি অপরাধ সংঘটিত হলো এজন্য হয়তো রাসুল (সা.) ধর্ষণকারীকে হত্যার শাস্তি দিয়েছেন।

ধর্ষণ বা ব্যাভিচারকারীকে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে যাতে মানুষ এই শাস্তি স্বচক্ষে দেখতে পায়। প্রকাশ্য শাস্তি দেখলে মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকবে এবং এ ধরনের কাজ থেকে নিজেকে নিবৃত রাখতে সচেষ্ট থাকবে।

বাংলাদেশে সম্প্রতি বহু ধর্ষণের ঘটনা সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে এবং কিছু কিছু ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ধর্ষণ এখন সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই সামাজিক ব্যাধি রোধ করতে ইসলামী আইনে প্রকাশ্যে শাস্তির বিধান চালু করা জরুরি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঐতিহাসিক গোরে শহীদ ময়দানে ঈদের জামাতে লক্ষাধিক মুসল্লি

ফের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চাইল জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সস্ত্রীক সাক্ষাৎ

এক শর্তে ইরানে হামলা বন্ধ করবে ইসরায়েল

রাজুর পাশে সেনাবাহিনী, মুগ্ধ তমা মির্জা

ঈদে নীল পোশাকে মিমের মুগ্ধতা

হানাহানির রাজনীতি ফিরে আসুক কখনই চাই না : হান্নান মাসউদ

দেশে দেশে যেভাবে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

গরুর মাংসের ৫টি জনপ্রিয় বিদেশি রেসিপি

রেকর্ড ভাঙলেন অক্ষয়

১০

হঠাৎ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায়, কী হচ্ছে সেখানে?

১১

ঈদের দিন স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করলেন স্বামী

১২

ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইরানের কড়া প্রতিক্রিয়া

১৩

গরুর মাংসের ১০টি ভিন্ন স্বাদের রেসিপি

১৪

ঈদের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

১৫

এপ্রিল মাস নির্বাচনের জন্য অনুপযুক্ত : ফখরুল

১৬

‘স্যার পাঁচ বছর, দালালদের কথা শুনবেন না’

১৭

ভোটের সমতল মাঠ থাকলে রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন হবে : ডা. শফিকুর রহমান

১৮

ব্রাজিল দলের কোচিং স্টাফে যোগ দিলেন আনচেলত্তির ছেলে

১৯

ট্রেনেই প্রাণ গেল ভারতীয় ক্রিকেটারের, রেল কর্তৃপক্ষকে দুষলেন সতীর্থরা

২০
X