হাদিস হলো হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র বাণী, কর্ম এবং তার অনুমোদনের সংকলন। ইসলামী জীবনব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই হাদিস, যা মুসলমানদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে (আচার-আচরণ, নৈতিকতা, ও ইবাদতসহ) সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
কোরআনের পর হাদিসই মুসলমানদের জন্য প্রধান পথপ্রদর্শক। এটি আমাদের ইসলামের বাস্তব প্রয়োগ শেখায় এবং আল্লাহর বাণী অনুসারে জীবন পরিচালনায় সহায়তা করে। চলুন, জেনে নেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় হাদিস:
‘নিশ্চয়ই, আমলসমূহ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ - সহিহ বুখারি: ১; সহিহ মুসলিম: ১৯০৭
ব্যাখ্যা ও প্রেক্ষাপট:
এ হাদিসটি মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি, যা নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজে প্রস্তাবনা দিয়েছেন হিজরতকরণের পর। যখন তিনি মদিনায় নবী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছিলেন, তখন তার সাহাবাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন যে, আমল বা কাজের গ্রহণযোগ্যতার মূল কী।
একটি প্রসিদ্ধ গল্প অনুসারে, দুই সাহাবি একসঙ্গে মদিনা থেকে যাত্রা করছিলেন। একজন জানতেন না যে, তার যাত্রার উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহর সন্তুষ্টি, আর অন্যজন শুধু লোকেদের প্রশংসা পেতে ছিল। এই সময় নবী (সা.) এ হাদিসটি উল্লেখ করে বলেছেন যে, কাজের আসল মূল্যায়ন হয় তার নিয়ত বা উদ্দেশ্যের ওপর।
এই হাদিস আমাদের শেখায় যে, শুধু বাহ্যিক কাজের মাধ্যমেই ইমান প্রমাণ হয় না; বরং অন্তরের উদ্দেশ্যও অপরিহার্য। কাজের স্বাভাবিক ফল এবং আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্যতা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে কাজের নিয়ত শুদ্ধতার ওপর।
এ শিক্ষাটি ইসলামে আমলের মূল্যায়নের একটি মৌলিক দিক, যা পরবর্তী সময়ে ‘নিয়ত’-এর গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং সকল ইসলামী আচরণ ও আমলের নৈতিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
মন্তব্য করুন