আমি বেঁচে আছি ও বাড়িতেই আছি। তবে আমার ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে ‘রমজান কাজী’ নামে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ সদস্য হিসেবে নিহত বলা হয়েছে। মৃত্যুর খবর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর।
নিজের মুখে এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এভাবেই কথাগুলো বলেছেন গোপালগঞ্জের সহিংসতায় নিহত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে প্রচারিত সেই ‘রমজান কাজী’ নামে জুলকারনাইন হৃদয় (১৬)।
ভুক্তভোগী জুলকারনাইন হৃদয় সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার ধোপাকানন্দির আলী আক্কাস সরকার ছেলে।
জানা যায়, বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ জেলার এনসিপির জুলাই পদযাত্রা নিয়ে সহিংসতায় চারজনের নিহত হওয়ার ঘটনায় জাতীয় একটি দৈনিকে ‘আমার সন্তানকে কোথায় পাবো’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে চারজনের ছবি ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে একটি ছবির নিচে রমজান কাজী নাম লেখা হয়। কিন্তু সেখানে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয় সে ছবিটি গত ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের একটি ভিডিও থেকে নেওয়া বলে অভিযোগ করেছেন জুলাইযোদ্ধা জুলকারনাইন হৃদয়।
এ ব্যাপারে জুলকারনাইন হৃদয় বলেন, আমি বেঁচে আছি এবং বাড়িতেই আছি। আমার মৃত্যুর খবর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই বিব্রতকর অবস্থায় আছি। কারণ প্রকৃতভাবে আমি একজন জুলাইযোদ্ধা। জুলাই আন্দোলনের সময় আমি বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি।
জুলাইযোদ্ধা হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত না। সাধারণ একজন স্টুডেন্ট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলার সদস্য। দেশের জন্য আন্দোলন করেছি অথচ তারা আওয়ামী লীগ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে। সামনে যদি আবারও দেশের জন্য কাজ করতে হয় আমি তা করব।’
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম সাকিব বলেন, বুধবার হৃদয়ের বিষয়ে যেটা ঘটেছে, গোপালগঞ্জে যে চারজন নিহত হয়েছে- এ নিউজের প্রেক্ষিতে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কেননা ও একজন জুলাইযোদ্ধা। ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল ফ্যাসিস্ট তাড়ানোর বিরুদ্ধে সেখানে সে আহত হয়। সে সময়কার একটা ভিডিও নিয়ে গোপালগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে সেখানে চালিয়ে দিয়েছে। সে বিষয়ে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এ বিষয়টি নিয়ে জুলকারনাইনের বাবা আক্কাস আলী বলেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ছবি নামিয়ে গোপালগঞ্জের বিষয়টিতে আমার ছেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমার ছেলে বেঁচে আছে এবং আমাদের কাছেই আছে। বুধবার সে কামারখন্দ নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বৃক্ষমেলা উপলক্ষে একটি মিটিং করেছে। আমার ছেলে গোপালগঞ্জে যায়নি এবং মারাও যায়নি। তারপরও ছেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এর জন্য প্রধান উপদেষ্টা বরাবর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন