কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ষড়যন্ত্রকারীরা ঘাপটি মেরে আছে: ডা. জাহিদ

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ। ছবি : কালবেলা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের (বিএসপিপি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, গণতন্ত্র ফেরানোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ঘাপটি মেরে আছে’। এজন্য সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভেতরে যারা আজ গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায় সেই ষড়যন্ত্রকারীরাও ঘাপটি মেরে আছে। তাদের চরিত্র উন্মোচন করা আজকে আমাদের দায়িত্ব। মিটফোর্ডের ঘটনার পর দ্রুততার সাথে বিএনপি ও তার অঙ্গসহযোগী সংগঠন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং দাবি তুলেছে দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই আহ্বান জানান।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, তার পরও আমাদের নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ট্যাগিং করা হচ্ছে। আপনারা একবারও ভাবেন না আপনারা কী করছেন? আপনারা কেন আগুন নিয়ে খেলার চেষ্টা করছেন, অন্যের ক্রীড়নক হয়ে কেন আপনারা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বিনষ্ট করার চেষ্টা করছেন। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। ওদের (ষড়যন্ত্রকারীদের) উসকানিতে পা দেওয়া যাবে না।

ঐক্য বিনষ্টকারীদের উদ্দেশে ডা. জাহিদ বলেন, রাজনীতি করুন, ময়দানে আসুন। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো একত্রিত কর্মসূচি নিয়ে এসেছে। আপনাদের কী কর্মসূচি আছে, সেটি নিয়ে আসুন। কর্মসূচির নামের খবর নেই। কথায় কথায় পিআর (সংখ্যানুপাতিক হারে ভোট ব্যবস্থা) বলবেন, কথায় কথায় স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাই। গণতন্ত্রের লড়াই জাতীয় নির্বাচনের জন্য। স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের জন্য গণতন্ত্রের লড়াই হয় না।

তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশে ৫৪ বছর কেন ১৫৪ বছরেও কোনো প্র্যাকটিস হয়নি। আজ কেন এসব কথা বলে বিবাদ-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছেন। তার অর্থ হচ্ছে, আপনারা গণতন্ত্রকে প্রলম্বিত করতে চান, গণতন্ত্র যাতে ফিরে না আসে তাহলে হয়তো আপনাদের অন্য সুবিধা আছে। মনে রাখবেন, জনগণকে ক্ষমতাহীন করে বেশিদিন যদি থাকতে চান, এই জনগণ কিন্তু ফুঁসে উঠবে। তখন সেই আগুনে আপনারা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি সবাইকে উদাত্তকণ্ঠে আহ্বান জানাতে চাই, ধৈর্য ধরুন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচারকে যেমন রুখেছি, তারা পালিয়ে গেছে এবং একইভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। কোনো অবস্থাতেই ষড়যন্ত্রকারীরা কামিয়াব হবে না।

দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। সমাবেশের পর মৌন মিছিল কদম ফোয়ারা চত্বর ঘুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। বিএসপিপির সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে পেশাজীবী নেতা সৈয়দ আলমগীর, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, শামসুল আলম সেলিম, আবদুল বারী, অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, শামীমুর রহমান শামীম, এ এস হায়দার পারভেজ, ডা. রফিকুল কবির লাবু, রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিতে হামলা প্রসঙ্গে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকার নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এই গোপালগঞ্জ আপনাদের খেয়াল আছে, কোটালীপাড়ায় বোমার হামলার কথা। প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) থাকা অবস্থায় উনার এখানে এত কিছু থাকার পরও কীভাবে বোমা ফুটল? সেখানে তখন কোথায় ছিল গোয়েন্দা বাহিনী। অর্থাৎ ষড়যন্ত্র যদি না হয় তাহলে এরকম ঘটনা ঘটানো যায় না। গতকাল তো ফরিদপুরে সুন্দর প্রোগ্রাম হলো সেখানে তো কিছু হলো না। গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী সবই তো কাছাকাছি। আপনারা নড়াইল গেলেন কিছু হলো না, সারা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন কোথাও কিছু হয়নি, ওখানে কেন হচ্ছে? কাজেই মনে রাখতে হবে, স্বৈরাচারের দোসরদের ওপর দোষ চাপাচ্ছি ঠিকই আছে; কিন্তু আমাদের ভেতরে যারা আজ গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায় সেই ষড়যন্ত্রকারীরাও ঘাপটি মেরে আছে তাদের চরিত্র উন্মোচন করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে পেশাজীবীদের অবদানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে রাজনীতিবিদরাও ছিলেন, পেশাজীবীরাও ছিলেন এবং আছেন। এ অবস্থায় আমরা যখন দেখতে পাই রাজনীতিবিদদের মধ্যে ছোট ছোট স্বার্থের জন্য অনৈক্য তখন আমরা হতাশাগ্রস্ত হই। আমরা সাবধান করে দিই, আপনারা (রাজনীতিবিদরা) দ্বিধাবিভক্তি হবেন না। ঐক্য বিনষ্ট করবেন।

ডা. জাহিদ বলেন, অনেক উপদেষ্টার কথা শুনলে মনে হয় যেন উনারা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবেন, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আপনারা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ছিলেন তাদের সমর্থিত হয়ে একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে আপনারা দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে জনগণ আপনাদের ফুলের মালা দেবে। আর ব্যর্থ হলে বা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে টালবাহানা করলে জনগণ আবারও কোনো ইতিহাস সৃষ্টি করবে, সেটি আপনাদের মনে রাখা উচিত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু ২৪ জুলাই, বাড়ছে ফি 

ঢাবিতে তরুণ লেখক সম্মেলন শনিবার

যুব মহিলা লীগ নেত্রী তানিয়া গ্রেপ্তার

বেরোবির ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ লাল কাপড়ে ঢেকে দিলেন শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

জামিনে বেরিয়ে নিখোঁজ, ৩ দিন পর মিলল মরদেহ

স্টারলিংকের অফিসিয়াল রিসেলার হলো বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি

দ্রুত নরম হয়ে যাচ্ছে ডিউক বল, তদন্তে নামছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান

শহীদ মুগ্ধকে নিয়ে স্নিগ্ধর আবেগঘন লেখা

ম্যুরাল থেকে মুছে দেওয়া হলো শেখ মুজিবের ছবি

১০

‘যারা পিআর বোঝে না, তাদের রাজনীতি করার দরকার নেই’

১১

নির্মাণাধীন ভবনের ৯ তলা থেকে পড়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু

১২

আ.লীগের তওবার সুযোগ নেই : হাসনাত আব্দুল্লাহ

১৩

পিআর পদ্ধতির কথা উঠলে, কেউ কেউ ভয় পায় : চরমোনাই পীর

১৪

জামায়াতের বিশেষ ট্রেন নিয়ে রেলওয়ের বিবৃতি

১৫

ফিরে আসা বম পরিবারের মাঝে সেনাবাহিনীর সহায়তা

১৬

আগামী ৫ দিনের বৃষ্টির পূর্বাভাস

১৭

মুরাদনগরে সেনা মোতায়েন

১৮

নব্য রাজনীতিবিদদের গোপালগঞ্জ থেকে পলায়ন জাতির জন্য লজ্জার: ডা. আউয়াল

১৯

দ্রুত নির্বাচন দিন, দেশে শান্তি ফিরবে : মির্জা আব্বাস

২০
X