

জাহেলি যুগে অনেক ধরনের কুসংস্কার ও অহেতুক বিশ্বাস প্রচলিত ছিল। আরবরা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে বের হওয়ার আগে পাখি ওড়াত, পাখিটি উড়ে ডান দিকে গেলে যাত্রা শুভ মনে করত, আর বাঁ দিকে গেলে অশুভ মনে করত। কারও বাড়িতে প্যাঁচা বসলে মনে করা হতো গৃহবাসীদের নিকটতম কারও মৃত্যু হবে অথবা ঘর বিরান হয়ে যাবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) কোরআন-সুন্নাহর শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ থেকে সেসব কুসংস্কার দূর করেন। তিনি (সা.) বলেন, ‘এসব কুলক্ষণের কোনো বাস্তবতা নেই’ (বোখারি : ৫৭০৭)। অন্য এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল (বিশ্বাস পোষণ) করবে, যে বিষয়ে আমার অনুমোদন নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে।’ (মুসলিম : ১৭১৮)
ইসলামী জ্ঞানের অভাবে আমাদের দেশেও নানা কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। অনেক এলাকায়ই রাতকেন্দ্রিক কিছু অহেতুক বিশ্বাস প্রচলিত আছে। নিচে কালবেলার পাঠকদের জন্য এর কিছু উদাহরণ দিয়েছেন রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ।
১. রাতে নখ, চুল, দাড়ি, গোঁফ ইত্যাদি কাটতে নেই।
২. রাতে আয়না দেখতে নেই।
৩. ঘরের ময়লা পানি রাতে বাইরে ফেললে সংসারে অমঙ্গল হয়।
৪. রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।
৫. রাতে ফল পাড়া ও গাছের পাতা ছেঁড়া যাবে না।
৬. রাতে কাউকে সুই-সুতা দিতে নেই।
৭. রাতে কোনো কিছুর লেনদেন করা ভালো নয়।
৮. রাতের বেলা কালিজিরার ভর্তা খেলে মায়ের জানাজা পায় না।
৯. খালি ঘরে সন্ধ্যাবাতি দিতে হয়, না হলে বিপদ আসে।
১০. রাতে কাক বা কুকুর ডাকলে বিপদ আসে।
১১. রাতে প্যাঁচার ডাককে বিপৎসংকেত মনে করা হয়।
ইয়াহইয়া শহিদ জানান, উল্লিখিত কুসংস্কারগুলো ছাড়াও বিভিন্ন এলাকাভেদে আরও অনেক কুসংস্কারের প্রচলন রয়েছে। তিনি বলেন, এসব মনগড়া কথা। ইসলামে এর কোনো ভিত্তি নেই। একজন মুসলমানের কাজ হলো সব ধরনের কুসংস্কার বাদ দিয়ে সব ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার ওপর দৃঢ় ঈমান ও সুদৃঢ় আস্থা রাখবে।
হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের ৭০ হাজার লোক বিনা হিসাবেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হবে এমন লোক, যারা শরিয়তে নিষিদ্ধ ঝাড়ফুঁকের আশ্রয় নেয় না, কোনো বস্তুর শুভ-অশুভ মানে না। একমাত্র মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে।’ (বোখারি : ৬৪৭২)
মন্তব্য করুন