

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করেছেন। সাহিত্য, ভাষা ও সংস্কৃতিভিত্তিক এসব প্রতিযোগিতায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তারা একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন।
সম্প্রতি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘লিট কার্নিভাল’-এ প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। কবিতা পাঠ, সৃজনশীল লেখা ও ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে তারা দুটি পুরস্কার অর্জন করেন।
আয়োজক সূত্র জানায়, বিষয়বস্তু নির্বাচন ও উপস্থাপনার ধারাবাহিকতা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বিচারকদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
এদিকে একই সময়ে ডুয়েট (DUET) আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ভাষা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ‘প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন রাউন্ডে ভাষা দক্ষতা, তাৎক্ষণিক ভাব প্রকাশ এবং দলগত সমন্বয়ের ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। নিয়মিত অনুশীলন ও সুসংগঠিত দলগত প্রস্তুতির ফলেই দলটি শেষ পর্যন্ত শিরোপা অর্জনে সক্ষম হয়।
এছাড়া সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত লোকসংস্কৃতি প্রতিযোগিতার ‘লোকচিত্র’ বিভাগে অংশ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষার্থী ফার্স্ট রানার-আপ হন। লোকজ বিষয় ও চিত্রভাষার ব্যবহার প্রতিযোগিতায় ইতিবাচক সাড়া পায়।
বিচারকদের মতে, বিষয় নির্বাচন ও উপস্থাপনায় সমন্বয়ের কারণে কাজটি আলাদাভাবে নজর কাড়ে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায়ও প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। বক্তৃতা, বিতর্ক, সাহিত্য উপস্থাপনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় তারা বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করে।
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নাজলা ফাতমী বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের বাইরেও শেখার সুযোগ দিতে বিভাগ থেকে নিয়মিত উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের ভাষা ব্যবহার, আত্মবিশ্বাস ও দলগত কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ায়। নিয়মিত চর্চার ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রতিযোগিতার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুতি সভা, দলগত অনুশীলন এবং শিক্ষক পরামর্শের ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়বস্তু নির্বাচন, উপস্থাপনার কাঠামো ও সময় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষকরা দিকনির্দেশনা দেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আন্তরিকতাকেও সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একই মঞ্চে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে তারা। একই সঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন এবং ভিন্ন পরিবেশে কাজ করার মধ্য দিয়ে আত্মবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে।
ইংরেজি বিভাগের ধারাবাহিক এই সাফল্যকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল অ্যাডভাইজার প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল কবির। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এসব অর্জনের ফলে ক্যাম্পাসে সহশিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতি এসেছে। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ভাষা ব্যবহার, আত্মপ্রকাশ ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তারা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা ব্যক্তিগত ও শিক্ষাগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থীদের সময় ব্যবস্থাপনা, দলগত কাজ ও নেতৃত্বের দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক। প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপে দায়িত্ব ভাগ করে কাজ করা, সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা এবং প্রতিযোগিতার চাপ সামলানোর অভিজ্ঞতা শিক্ষাজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভবিষ্যতেও এ ধরনের অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেন, জাতীয় পর্যায়ের সাহিত্য, ভাষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য নিয়মিত অনুশীলন, কর্মশালা ও প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হবে। শিক্ষকরা আশা করছেন, ধারাবাহিক অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীদের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করবে এবং আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।
মন্তব্য করুন