চার দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় সরকার মহোদয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাটা আন্তরিকতা নিয়ে সমাধান করুন প্লিজ’।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, সরকার মহোদয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাটা আন্তরিকতা নিয়ে সমাধান করুন প্লিজ।
রাফে সালমান রিফাত বলেন, সমস্যা সমাধান না করে রেখে দিলে ভিন্ন দিকে মোড় নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। এমন ভলাটাইল সিচুয়েশনে সেই সুযোগটা দেওয়া ঠিক হবে না। সবকিছুতে সবাই ক্লান্ত।
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শাটডাউন ঘোষণা করেছেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে কাকরাইলে চলমান আন্দোলনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
অধ্যাপক ড. রইসউদ্দিন বলেন, আমরা এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার নিয়ে এসেছি, দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের ওপরে নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা এবং অন্যায়। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোনো ষড়যন্ত্র করতে আসেনি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন চলবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষা পরীক্ষা কার্যক্রম চলবে না।
তিনি বলেন, আমাদের এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় তাহলে ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।
এসময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান—‘আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়’, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাশ ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
বুধবার (১৪ মে) সকাল ১১টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষার্থী। লং মার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে এলে ১২টা ৪০মিনিটের দিকে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ওপর। এসময় ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানি ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন।
পরে রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ সামনে বিফ্রিং করতে আসেন। মাহফুজের বিফ্রিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা।এসময় উপদেষ্টা মাহফুজকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বক্তৃতার একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুড়ে মারেন একজন। উপদেষ্টা বিফ্রিং বন্ধ করে রাগ করে চলে যান। এদিকে উপদেষ্টা মাহফুজের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।
মন্তব্য করুন