কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫, ০১:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি জানালেন নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।

পোস্টে নাহিদ ইসলাম লিখেন, নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন এনসিপির অন্যতম মূলনীতি। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, নেতৃত্ব ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতে এনসিপি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

কয়েকটি বিষয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি-

১. বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি হলো মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সাম্য, ইনসাফ ও মানবিক মর্যাদার আদর্শ এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই এনসিপির পথচলা। এ ছাড়া আমরা বাংলার হিন্দু-মুসলমান-দলিতের উপনিবেশবিরোধী ও ব্রাহ্মণ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের ধারাবাহিকতাকে রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করি।

২. এনসিপি নাগরিকের ধর্মবিশ্বাস ও আত্মিক অনুভবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম—তার নৈতিকতা ও মানবিকতা এবং বাঙালি মুসলমানের ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনচর্চাকে এনসিপি মূল্যায়ন করে। সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে এনসিপি।

এনসিপি মনে করে রাষ্ট্রের উচিত প্রতিটি জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অখণ্ডতা রক্ষা করা। এনসিপি ইসলামবিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করে এবং ধর্মীয় উগ্রতা বা চরমপন্থাকে সমর্থন করে না। এনসিপি সেকুলারিস্ট বা ধর্মতান্ত্রিক (Theocratic)—কোনো মতবাদকেই আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করে না; বরং ধর্মীয় সহাবস্থান, সম্প্রীতি ও দায়-দরদ অনুশীলনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়াই এনসিপির লক্ষ্য।

৩. এনসিপি জাতি, ধর্ম বা গোত্রভিত্তিক পরিচয়ের পরিবর্তে সভ্যতাগত জাতীয় পরিচয় ধারণ করে। বহু ভাষা ও সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র বঙ্গীয় বদ্বীপের সভ্যতাগত পরিচয়কে ধারণ করে জাতীয় সংস্কৃতি গড়ে তুলবে এনসিপি।

৪. নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন এনসিপির অন্যতম মূলনীতি। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, নেতৃত্ব ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতে এনসিপি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। পারিবারিক আইনের আওতায় সম্পত্তিতে নারীর ন্যায্য অধিকার আদায়ে এনসিপি কাজ করবে।

৫. দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ বাংলাদেশের জন্য একটি সাংস্কৃতিক ও ভূরাজনৈতিক হুমকি। এনসিপি এই আধিপত্যবাদী প্রবণতার বিরুদ্ধে কঠোর রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবে। এনসিপি মনে করে বাংলাদেশের উচিত ন্যায্যতা, মর্যাদা, সভ্যতা ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে অন্য রাষ্ট্রের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক বৃদ্ধি করা।

৬. এনসিপি বৈষম্যহীন ইনসাফভিত্তিক দুর্নীতিমুক্ত একটি আর্থসামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যা একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের অনুরূপ হবে। শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, কৃষি, জলবায়ু, নগর ব্যবস্থাপনা, শ্রম অধিকার ও কর্মসংস্থান হবে এনসিপির প্রধান নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্র। বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে একটি নতুন অর্থনৈতিক জোন তৈরির ভিশন আছে এনসিপির।

৭. এনসিপি বিশ্বাস করে, একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে হলে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠন, প্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং নতুন সংবিধান প্রণয়ন জরুরি। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করা এনসিপির প্রধানতম রাজনৈতিক কর্তব্য। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের জন্য প্রথম ধাপটি হচ্ছে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়ন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অসচ্ছল শিক্ষার্থীর ভর্তির দায়িত্ব নিলেন ছাত্রদল নেতা বাসিত 

চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলছিল মতিউর, নেপথ্যে কী?

আ.লীগ কার্যালয়ে আরও বড় ব্যানার জুলাই যোদ্ধাদের

সিরিজে ফিরতে আশাবাদী অঙ্কনরা

ক্ষমা চাইলেন ইশরাক

কাশিমপুর কারাগারে নুসরাত ফারিয়া

পুরোনো মডেলেই হচ্ছে নতুন বাজেট : আমীর খসরু

জিপিওর সম্পদ সুরক্ষায় সমাবেশ 

জীবন বাঁচাতে মাঝ নদীতে ঝাঁপ দিলেন ট্রলারের যাত্রীরা

বামন দম্পতির আক্ষেপ / ‘অনেক কষ্টে মা হয়েছি ঠিকই, সন্তানের দুধ কেনার টাকা নেই’

১০

ইমরানকে যেভাবে সরানো হয়েছিল, একইভাবে শেহবাজকে সরাতে চায় পিটিআই

১১

হাসনাত আব্দুল্লাহকে কুমিল্লা বিএনপির আলটিমেটাম

১২

একই দিনে ২৩ নিয়োগ পরীক্ষা, বিপাকে চাকরিপ্রার্থীরা

১৩

৩৪তম বিসিএস পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দীন, সম্পাদক জুয়েল

১৪

১০ বছর পর প্রকাশ্যে চবি ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ-সমাবেশ

১৫

সিআইডির সাবেক প্রধানসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১৬

শত কোটি টাকা আত্মসাৎ / কাস্টমস কমিশনারের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক

১৭

সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি

১৮

রাষ্ট্রীয় সহায়তায় উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের দাবি বাগছাসের

১৯

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে কি না জানাল পাকিস্তান

২০
X