

দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার করা অপরাধ নয়। কিন্তু সেখানে হেইট স্পিচ যদি থাকে যা সহিংসতা তৈরি করে অথবা সহিংসতা তৈরির আহ্বান করে, তাহলে সেটা অপরাধ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ মতে, হেইট স্পিচ অপরাধ না। ফ্রিডম অব স্পিচ বা বাকস্বাধীনতা হিসেবে হেইট স্পিচকে রেসপেক্ট করা হয়েছে। তবে হেইট স্পিচ যদি ভায়োলেন্স বা সহিংসতা তৈরি করে অথবা ভায়োলেন্স কল করে তখন সেটা অপরাধ।
তিনি লেখেন, দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচার করা অপরাধ নয়। কিন্তু সেখানে হেইট স্পিচ যদি থাকে যা সহিংসতা তৈরি করে অথবা সহিংসতা তৈরির আহ্বান করে, তাহলে সেটা অপরাধ হবে।
তিনি আরও লেখেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের সময় মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে আমাদের যে এনগেজমেন্ট ছিল সেখানে সবাই এই মত সমর্থন করেছিলেন যে, ‘হেইট স্পিচ দ্যাট ইনস্টিগেটস ভায়োলেন্স’, ‘হেইট স্পিচ দ্যাট কলস ফর ভায়োলেন্স’—এই দুইটা অপরাধ।
পরিশেষে তিনি লেখেন, আপনি যদি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলো শোনেন, সেখানে দেখবেন অধিকাংশ বক্তব্য ওপেন কল ফর ভায়োলেন্স, কিছু কিছু ওপেন কল ফর ক্রিয়েটিং ন্যাশন ওয়াইড ভায়োলেন্স। ফলে এ ধরনের সহিংসতা তৈরির আহ্বান সংবলিত বক্তব্য ডিজিটাল মিডিয়া বা সাইবার স্পেসে প্রচার করাও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। এজন্য জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি বিষয়টি নিয়ে একটা সচেতনতামূলক প্রজ্ঞাপন এবং সতর্কতা জারি করেছে।
এর আগে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেওয়া হয়েছে। তবে সমানভাবে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার পরও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাজসাক্ষী হয়ে ঘটনার সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালকে বিচার কাজে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করায় মামুন এই সাজা পেয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় দেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব সম্পত্তি এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্দোলনকারী, শহীদ ও আহত আন্দোলনকারীদের মধ্যে তাদের ক্ষতির মাত্রা অনুপাতে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন