বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির চেয়ারে ফারুক আহমেদের মেয়াদ বুঝি শেষের পথে। গত কয়েকদিন ধরে চলা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে এবার খোদ ফারুকই ইঙ্গিত দিলেন—অন্তবর্তীকালীন সরকারপক্ষ তাকে আর এই দায়িত্বে দেখতে চায় না।
বুধবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে এক বৈঠকে এ বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা পেয়েছেন তিনি। যদিও ‘পদত্যাগ’ শব্দটি সরাসরি উচ্চারিত হয়নি, তবে উপদেষ্টার মন্তব্য ছিল যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ।
দেশের একটি দৈনিককে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় ফারুক বলেন, ‘উপদেষ্টা কিন্তু আমাকে পদত্যাগ করতে বলেননি। শুধু বলেছেন, আমাকে আর তারা কন্টিনিউ করাতে চান না।’
২০২৪ সালের ২১ আগস্ট জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচনের মাধ্যমে বোর্ডের শীর্ষপদে বসেন ফারুক আহমেদ। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, বিসিবি পরিচালনায় সরাসরি সরকারি হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ। অথচ এবার দৃশ্যপটে সেই শঙ্কাই ফিরে এসেছে।
যদি ফারুককে স্বেচ্ছায় সরে যেতে ‘পরোক্ষ চাপ’ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘সরকারি প্রভাব’ হিসেবে গণ্য হতে পারে। আর তেমন কিছু হলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সামনে দেখা দিতে পারে নিষেধাজ্ঞার কালো মেঘ—যেমনটা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বেলায়।
ফারুক যদি নিজের ইচ্ছায় পদত্যাগ করেন, তবুও প্রশ্ন থেকেই যাবে, আদৌ কি সিদ্ধান্তটি পুরোপুরি ব্যক্তিগত ছিল? নাকি তা ছিল সরকারি ইচ্ছারই বাস্তবায়ন? এমন পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।
এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথা জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। দেখা যাক, কী হয়।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই টালমাটাল প্রশাসনিক মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—সাময়িক সংকট নাকি বড় কোনো বিপর্যয়ের শুরু?
মন্তব্য করুন