এক সপ্তাহ আগেও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। এরপর সেই খবরটি নিজেই সত্য নয় বলে জানান স্ট্রিক। তবে এবার সেই খবরই সত্যি হলো। না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন টাইগারদের সাবেক এই পেস বোলিং কোচ। তার স্ত্রী নাদিনে স্ট্রিক এক ফেসবুক পোস্টে সেই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অনেকদিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছিলেন ৪৯ বছর বয়সী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার। চলতি বছরের মে মাসে খবর বেরিয়েছিল, লিভার এবং কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। ডাক্তারের পক্ষ থেকে জানা যায় হিথ স্ট্রিকের বাঁচার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এরপর থেকে তিনি ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন।
ফেসবুক পোস্টে তার স্ত্রী বলেন, ‘২০২৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর (আজ) ভোরে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং আমার সুন্দর সন্তানদের বাবাকে ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি নিজ পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে শেষ দিনগুলো কাটাতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রেম এবং শান্তিতে আচ্ছাদিত ছিলেন এবং একা পার্কে হাঁটেননি। আমাদের আত্মা অনন্তকালের জন্য আবদ্ধ, স্ট্রিকি। যতক্ষণ না আমি আবারও তোমাকে আঁকড়ে ধরি।’
১৯৭৪ সালের ১৬ মার্চ জিম্বাবুয়ের বুলাওয়েতে জন্মগ্রহণ করেন হিথ হিল্টন স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেওয়া এই পেসার মূলত কোলন এবং যকৃতের ক্যানসারে আক্রান্ত।
১৯৯৩ সালে ১০ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের জার্সিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল হিথ স্ট্রিকের। এর পরে এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিম্বাবুয়ের হয়েছে খেলেছেন ১৮৯ ওয়ানডে এবং ৬৫ টেস্ট।
টেস্টে ১৯৯০ রান এবং ২১৬টি উইকেট রয়েছে তার। আর সাদা বলের ক্রিকেটে ২৯৪৩ রান এবং ২৩৯টি উইকেট রয়েছে। ২০০৫-এ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শেষ ম্যাচ খেলেন তিনি। জিম্বাবুয়েকে ২১টি টেস্ট এবং ৬৮টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।
ক্রিকেট ছাড়ার পর কোচিং পেশাতেও বেশ সফল ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন স্টিক। আর ২০১৪ সালে দায়িত্ব পান বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচের। তার দুই বছরের দায়িত্বকালে বেশ উন্নতি করে টাইগার পেসাররা।
২০২১ সালে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে তাকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি তবে সর্বদা এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন তিনি। বরাবরই পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে স্বর্ণযুগ ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল। সেই দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন স্ট্রিক।
তিনিই জিম্বাবুয়ের একমাত্র বোলার, যার টেস্টে ১০০-র ওপর উইকেট রয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের চতুর্থ বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট শিকারের কীর্তি রয়েছে তার।
এ ছাড়া দেশটির একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ১ হাজার রান ও ১০০ এবং ওয়ানডেতে ২ হাজার রান ও ২০০ উইকেট রয়েছে স্ট্রিকের।
মন্তব্য করুন