শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান আর পারভেজ হোসেন ইমন ঝড় তুলেছিলেন শারজাহতে। প্রথম ১১ ওভারে বিনা উইকেটে আসে ১০৯ রান। মনে হচ্ছিল, ১৫২ রানের লক্ষ্য ছুঁতে খুব একটা কষ্ট হবে না বাংলাদেশ দলের। কিন্তু ওপেনারদের বিদায়ের পর যেন ভেঙে পড়ে গোটা ইনিংস। মাত্র ৯ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন টপ অর্ডারের ছয় ব্যাটার, শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল ম্যাচটি বাংলাদেশ হেরেই যাবে। তবে শেষ পর্যন্ত রিশাদ আর নুুরুলের ব্যাটে চড়ে ম্যাচটি জিতে নেয় বাংলাদেশ।
১১ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০৯ রান—টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন অবস্থায় থাকা দল সাধারণত চোখ বন্ধ করেই ম্যাচ জিতে যায়। হাতে তখনও ৫১ বল, দরকার মাত্র ৪৩ রান। কিন্তু এখানেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ দেখিয়ে দিল কীভাবে সহজ জয়ও মুহূর্তেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারে। আফগান স্পিনার রশিদ খান ও নূর আহমদের ঘূর্ণিতে চোখের পলকে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল টাইগাররা। শারজাহতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি তখন বাংলাদেশের হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভরসা হয়ে দাঁড়ালেন দুই জন—অভিজ্ঞ নুরুল হাসান সোহান ও তরুণ রিশাদ হোসেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতেই ৪ উইকেট হাতে রেখেই আফগানিস্তানকে হারিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে করে তোলে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান। গুরবাজ ৩১ বলে ৪০ ও মোহাম্মদ নবি ২৫ বলে ৩৮ রান করেন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তানজিম সাকিব ও রিশাদ নেন দুইটি করে উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় দুর্দান্ত শুরু দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। ৯৫ রানের জুটি গড়ে প্রথম ১০ ওভারেই ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তারা। ইমন ৩৭ বলে ৫৪ রান, আর তানজিদ ৩৭ বলেই করেন ৫১।
কিন্তু একাদশ ওভারে ইমনের বিদায়ের পরেই শুরু হয় ধস। রশিদ খান টানা আঘাতে ফিরিয়ে দেন সাইফ হাসান, তানজিদ, জাকের আলি ও শামীম হোসেনকে। নূর আহমদের শিকার হন তানজিম সাকিব। ১০৯/০ থেকে ১১৮/৬—বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে তখন এক অজানা শঙ্কা।
সেখানেই হাল ধরেন সোহান ও রিশাদ। শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৩৪ রান। আফগান স্পিনারদের চাপে ভীত না হয়ে সোহান খেলেন ১৩ বলে ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস, যাতে ছিল দুই ছক্কা ও এক চার। রিশাদও ৯ বলে অপরাজিত ১৪ রান যোগ করেন। তাদের ১৮ বলে ৩৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি দলকে এনে দেয় দারুণ এক জয়।
আফগানিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট নেন রশিদ খান, তবে তার দারুণ স্পেলও শেষ পর্যন্ত দলের জয়ে পরিণত হয়নি।
৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচ শিখিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেটে জয় কখনোই নিশ্চিত হয় না—শেষ অব্দি লড়াই করলেই ম্যাচ ঘুরে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন