শেষ বলের পর মিরপুরের আকাশে নেমে এলো এক নিঃশব্দ হতাশা। ১ রানের ব্যবধানে হার, জয় হাতছাড়া। অথচ ম্যাচটা ছিল একেবারে মুঠোয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সুপার ওভারে হেরে সিরিজে সমতা—এর পরেও বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ শান্তভাবে মেনে নিলেন ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আবার সামনে তাকালেন আশাবাদ নিয়েই।
ম্যাচ শেষে ব্রডকাস্টে দেওয়া মিরাজের সাক্ষাৎকারে ঝরে পড়ল গর্ব, হতাশা আর আত্মবিশ্বাসের মিশেল।
‘সুপার ওভারটা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। ছেলেরা দারুণ খেলেছে, সবাই লড়েছে শেষ পর্যন্ত। মুস্তাফিজ অসাধারণ বল করেছে (সুপার ওভারে), ওর ওপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা ছিল। সামান্য ব্যবধানেই হারলাম, কিন্তু আমরা মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়ছি।’
অধিনায়ক বিশেষভাবে প্রশংসা করেছেন তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনের। ‘এই পিচে ব্যাট করা সহজ ছিল না। বল অনেক ধীরে আসছিল, তাই রান তোলা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু রিশাদ যেভাবে ব্যাট করেছে—সেটা ছিল ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দলের জন্য দারুণ কিছু রান করেছে সে, আর সব সময়ই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে।’
রিশাদের ব্যাটে এসেছিল ১৪ বলে অপরাজিত ৩৯ রান, আর বল হাতে ৩ উইকেট—যে কারণে বাংলাদেশ লড়াইয়ে টিকে ছিল শেষ পর্যন্ত।
শেষ ওভারে সাইফ হাসানকে বল হাতে দেওয়ার কারণ নিয়েও খোলাখুলি জানালেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘শেষ ওভারের সময় আমাদের তেমন বিকল্প ছিল না। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, যদি একটা উইকেট নিতে পারি তাহলে ম্যাচটা আমাদের দিকেই চলে যাবে। আর সত্যি বলতে, যদি শেষ বলের ক্যাচটা ধরা যেত—আমরাই জিততাম।’
শেষ মুহূর্তের সেই ভুলে জয় হাতছাড়া হলেও, মনোবল হারাতে রাজি নন মিরাজ। ‘সবাই খুব ভালো খেলেছে, আমি দলের মানসিকতা নিয়ে গর্বিত। জয় পাইনি, কিন্তু চেষ্টা থামবে না। সিরিজ এখনও বাকি আছে, আমরা এখন তাকিয়ে আছি পরের ম্যাচের দিকে’ জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাগ্যে জোটে হারের তেতো স্বাদ, কিন্তু মিরাজের কথায় ছিল এক নতুন প্রজন্মের আত্মবিশ্বাস—যারা হারের মধ্যেও শেখে, এবং আবারও ফিরে আসতে জানে।
২৩ অক্টোবরের তৃতীয় ওয়ানডেই তাই এখন মিরপুরের নতুন আশার প্রতীক।
মন্তব্য করুন