

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে উইকেটরক্ষকদের আলোচনায় এতদিন মুশফিকুর রহিমের নামটাই ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল। তবে সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিন ইতিহাসের পাতায় নতুন এক অধ্যায় লিখলেন লিটন দাস। মুশফিকের দীর্ঘদিনের একটি রেকর্ড এবার ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
মঙ্গলবার সিলেট টেস্টের প্রথম দিনে আইরিশ ইনিংসে দুটি স্টাম্পিং করেছেন লিটন। এই দুটি স্টাম্পিংয়ের মধ্য দিয়েই তিনি টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ স্টাম্পিংয়ের মালিক হয়েছেন। তার স্টাম্পিং সংখ্যা এখন ১৭—যা এতদিন পর্যন্ত ভাগাভাগি করে রেখেছিলেন মুশফিক ও লিটন (১৫ করে)।
গত জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে মুশফিকের রেকর্ডে স্পর্শ করেছিলেন লিটন। এবার সেই রেকর্ডকে পেছনে ফেললেন দৃঢ়ভাবে। যদিও সারাদিনে আর কোনো ক্যাচ বা রানআউটে অংশ নেননি, তবুও স্টাম্পের পেছনে তার উপস্থিতি ছিল প্রভাবশালী।
তিন সংস্করণ মিলিয়ে অবশ্য এখনো এগিয়ে আছেন মুশফিক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার স্টাম্পিং সংখ্যা ১০১, যা বাংলাদেশের যেকোনো ক্রিকেটারের মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় স্থানে খালেদ মাসুদ পাইলট (৪৪), আর লিটন এখন আছেন তৃতীয় স্থানে ৩৪ স্টাম্পিং নিয়ে।
সীমিত ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় মুশফিক এখন কেবল টেস্টেই সক্রিয়। তবে উইকেটের পেছনে লিটনের ধারাবাহিক উপস্থিতি দেখে মনে হয়, এই রেকর্ডে মুশফিককে ছাড়িয়ে যাওয়া তার পক্ষে এখন সময়ের অপেক্ষা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সামগ্রিক পরিসংখ্যানে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ভারতের কিংবদন্তি মাহেন্দ্র সিং ধোনি—তার স্টাম্পিং সংখ্যা ১৯৫। এরপর আছেন কুমার সাঙ্গাকারা (১৩৯), রমেশ কালুভিতারানা (১০১) ও চতুর্থ স্থানে বাংলাদেশের নিজস্ব গর্ব, মুশফিকুর রহিম।
শুধু স্টাম্পিং নয়, টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের রেকর্ডও এখন লিটনের। ৫১ টেস্টে তার মোট ডিসমিসাল সংখ্যা ১১৬, যেখানে মুশফিকের ডিসমিসাল ১১৩। সব সংস্করণ মিলিয়ে অবশ্য এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’—তার ডিসমিসাল সংখ্যা ৪৭২, এরপর পাইলটের ২১৩ ও লিটনের ১৯২।
মুশফিক যেখানে শততম টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায়, তার ঠিক আগেই এই তরুণ সতীর্থের হাতে একটি রেকর্ড চলে যাওয়া হয়তো প্রজন্ম বদলের এক নীরব ইঙ্গিত। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উইকেটরক্ষক অধ্যায়ে এখন নতুন নায়ক লিটন দাস।
মন্তব্য করুন